ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঠাকুরগাঁওয়ে আলুবীজে ভেজাল: কৃষকের মাথায় হাত

ফিরোজ আমিন সরকার, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১১

ঠাকুরগাঁও: বেশি ফলনের আশায় চড়া দামে একটি কোম্পানির ভেজাল আলুবীজ কিনে ঠাকুরগাঁওয়ের কয়েক শ কৃষক এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

ফলন বেশি তো হয়-ই নি, বরং চারা গাছও মরতে শুরু করায় তারা এ দুর্দশায় পড়েন।



হাইটেক এগ্রো নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে চড়া দামে আলুবীজ  কেনার পর তারা এ দুর্দশায় পড়েন। কৃষকরা তিপূরণ দাবি করায় কোম্পানির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন।

কৃষকদের অভিযোগ, কোম্পানিটির আলুবীজ কিনে লাগালে বিঘাপ্রতি ৫০ মণ আলু পাওয়া যাবে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু তাদের আলুবীজ লাগানোর পর সে বীজ মারা যাওয়ায় তাদের লাভের বদলে লোকসান গুণতে হচ্ছে।

তারা অভিযোগ করে বলেন, কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়  কোম্পানিটির আলুবীজ কিনলে বিঘাপ্রতি ৫০ মণ আলু পাওয়া যাবে। তারা আর্থিকভাবে অনেক বেশি লাভবান হবেন। এ কথা শুনে অনেক কৃষক চড়া সুদে ঋণ নিয়ে হাইটেক এগ্রো কোম্পানির কাছ থেকে কার্ডিনাল ও গ্রানলা জাতের আলুবীজ কেনেন। কোম্পানিটি কৃষকদের কাছে প্রতি কেজি আলুবীজ ২৪ থেকে ৩৬ টাকা দরে বিক্রি করে।

কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, সদর উপজেলার নারগুন, জগন্নাথপুর, কহরপাড়া, পোকাতি ও খোঁচাবাড়ি এলাকার কয়েক শ কৃষকের জমিতে বীজ রোপনের পর চারা গজাতে দেরি হচ্ছে। আবার গজানো চারা নানা রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া মাঠের আলুগাছ দিন দিন শুকিয়ে মারা  যেতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় কৃষকরা বীজ প্রতিষ্ঠানটির কাছে তিপূরণ দাবি করলে কোম্পানিটির লোকজন গা ঢাকা দেয়।

এ বিষয়ে অভিযোগ করে সদর উপজেলার কহরপাড়ার তিগ্রস্ত কৃষক আবু তাহের, সাইফুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বেশি দাম দিয়ে বেশি ফলনের আশায় হাইটেক কোম্পানির আলুবীজ কিনেছি। কিন্তু, এখন যেভাবে গাছ মারা যাচ্ছে, তাতে বেশি ফলন পাওয়া  তো দূরের কথা, চালান নিয়ে টানাটানি!

তারা আরো অভিযোগ করেন, কোম্পানির লোকজনের কাছে তিপূরণ দাবি করা হলে তারা তা পাত্তা দেয়নি। এখন তারা গা ঢাকা দেওয়ায় তাদের খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না।

নারগুন গ্রামের তিগ্রস্ত কৃষক মো. বিপ্লব জানান, দিন যতই যাচ্ছে, মরা গাছ তুলতে তুলতে এখন আলুতে ফাঁকা হয়ে গেছে। এই সব তে থেকে আর তেমন ফলন আসবে না।

এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয় কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এজাজ উদ্দিন তিগ্রস্ত আলুতে পরিদর্শন করেন। তিনি কৃষকদের তিগ্রস্ত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খায়রুল আলম বিষয়টি জানেন না বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে তিনি জানান, অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কৃষকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ  করা হলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।