ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

উৎপাদনশীলতার সংস্থাই ‘অনুৎপাদনশীল’

আনোয়ারুল করিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১০
উৎপাদনশীলতার সংস্থাই ‘অনুৎপাদনশীল’

ঢাকা: দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে গত ২১ বছরে একটি ‘অনুৎপাদনশীল’ সংস্থায় পরিণত হয়েছে জাতীয় উৎপাদনশীলতা সংস্থা (এনপিও)। এ দীর্ঘ সময়ে সংস্থাটির বৈঠক হয়েছে মাত্র ৭টি।

আর গত পাঁচ বছরে হয়নি একটিও। শুধু তাই নয়, এই পাঁচ বছরে হয়নি কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন।

এরপরও সংস্থাটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে- তারা ‘বসে ছিলেন না’ বরং আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করে গেছেন।

এ অবস্থায় ২০০৫ সালের ২০ জুলাইয়ের পর বুধবার অষ্টম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতীয় উৎপাদনশীলতা পরিষদ (এনপিসি)।

সরকারি ও বেসরকারি শিল্পকারখানার উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ১৯৮৯ সালে গঠিত এ সংস্থার মূল কাজ পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া।

সূত্র জানায়, এনপিও পরিচালনায় সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য ৩৭ সদস্যের এনপিসি কাজ করে। এ কমিটিতে ৯টি মন্ত্রণালয়ের সচিব ছাড়াও সরকারি, বেসরকারি কারখানার প্রতিনিধি, শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, প্রযুক্তিবিদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। আর শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে থাকে মূল সংস্থাটি।

এনপিও’র পরিচালক ড. নজরুল ইসলাম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘নানা কারণে পাঁচবছর এনপিসি’র সভা হয়নি। বুধবার সকাল ১১টায় এনপিও’র অষ্টম সভার জন্য এরই মধ্যে পরিষদের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ’

এনপিও ‘এশীয় উৎপাদনশীলতা সংস্থা’র নীতি অনুযায়ী কাজ করে বলেও জানান তিনি।  

একই সঙ্গে নজরুল ইসলাম দাবি করেন, দীর্ঘ সময় বৈঠক না হলেও তারা ‘বসে ছিলেন না’ বরং আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করে গেছেন।

বিভিন্ন কলকারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা নিজেরাই যোগাযোগ করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ৫ বছর পর পরিষদের অষ্টম সভার আয়োজন করা হলেও ২০০৫ সালে গৃহীত ১২টি সিদ্ধান্তের বেশিরভাগ এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এনপিসির সভা নিয়মিত অন্তত বছরে একবার আয়োজনের কথা থাকলেও তা করা হয় না। এছাড়া উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সরকারি ও বেসরকারি বৃহৎ শিল্পকারখানাগুলোর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বছরে একটি জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্তও পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করতে পারেনি তারা।  

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, বুধবারের সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে একটি জাতীয় সম্মেলন আয়োজন করার তারিখ নির্ধারণ, জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস পালনের দিনক্ষণ নির্ধারণ, এনপিও ভবন নির্মাণ, দেশের বিভিন্ন বিভাগে আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন, কলকারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিও জন্য তথ্য সংগ্রহে এনপিওকে সক্ষমতা অর্জনের উপায় প্রভৃতি।

এছাড়া কলকারখানার উৎপাদন ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার’ দেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে ওই বৈঠকে।

এনপিও দেশের বৃহৎ শিল্পের সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে আরো বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি), বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল সংস্থা (বিএসইসি), বাংলাদেশ ুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক), বাংলাদেশে চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থা, বাংলাদেশ পাটকল সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি। ’

এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে তৈরি পোশাক শিল্পের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন ‘বিজিএমইএ’, আসবাবপত্র শিল্পের মানোন্নয়নে বাংলাদেশ ফার্নিচার ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশন, ওষুধ শিল্পের উৎপাদনদক্ষতা বাড়াতে বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কাজ করে বেসরকারি পর্যায়েও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এনপিও ভূমিকা রাখছে বলে দাবি করেন এনপিও’র পরিচালক।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, ১৩ জুলাই ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।