ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

রমজানের চার সপ্তাহ বাকি: টিসিবির উদ্যোগে ধীরগতি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১০
রমজানের চার সপ্তাহ বাকি: টিসিবির উদ্যোগে ধীরগতি

ঢাকা: রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-র উদ্যোগ থাকলেও তার বাস্তবায়ন অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। রমজান শুরু হতে মাত্র চার সপ্তাহ বাকি থাকলেও লক্ষ্যমাত্রার ২০ শতাংশ পণ্যও টিসিবির হাতে আসেনি।

রমজানের শুরুর আগে পৌঁছাবে কিনা তাও নিশ্চিত নয় সংস্থাটি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, রমজানে ডিলারের মাধ্যমে ও সরাসরি ট্রাকে বিক্রির উদ্দেশ্যে টিসিবি ২৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল, ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি, ৭২ হাজার মেট্রিক টন সয়াবিন তেল, ১৫ হাজার মেট্রিক টন পাম অয়েল এবং ২ হাজার মেট্রিক টন ছোলা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এসব পণ্য স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানি করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।

পণ্য সংগ্রহের এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে টিসিবি জুন মাসে সরকারের কাছে ৫০০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি চায়। গত বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয় টিসিবিকে ১৮৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দেয় বলে সূত্র জানায়।

টিসিবি সূত্র জানায়, পণ্য কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করার পাশাপাশি স্থানীয় উৎপাদকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরই মধ্যে কিছু পণ্য গুদামে এসেছে এবং কিছু পণ্যের জন্য চুক্তি হয়েছে।

মসুর ডাল কেনার ক্ষেত্রেও লক্ষমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে টিসিবি।

সংস্থাটির প্রধান কর্মকর্তা (বাণিজ্য) আল আমিন মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান রোববার বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ২৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডালের মধ্যে ৩ হাজার মেট্রিক টন কেনা হয়েছে এবং আরো ১০ হাজার মেট্রিক টন কেনার প্রক্রিয়াধীন আছে। ’

সে হিসেবে বাকি ১২ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল সংগ্রহের কোনো উদ্যোগ এ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি।  

টিসিবির প্রধান বাণিজ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রার ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনির প্রথম কিস্তির ১০ হাজার মেট্রিক টন আগামী ১৪ জুলাই গুদামে ঢুকবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ’

এছাড়াও, লক্ষমাত্রার ৭২ হাজার মেট্রিক টন সয়াবিনের মধ্যে ১৮ হাজার মেট্রিক টন, ১৫ হাজার মেট্রিক টন পাম অয়েলের মধ্যে ৭৪ হাজার লিটার, ২ হাজার মেট্রিক টন ছোলার ১ হাজার মেট্রিক টন এ পর্যন্ত টিসিবির কাছে এসেছে।

এসব পণ্য টিসিবি প্রায় এক হাজার সাতশ’ ডিলারের মাধ্যমে সারাদেশে খোলাবাজারে নির্ধারিত দরে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানীতে ট্রাকে করে টিসিবির কর্মীদের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে বলে জানান আল আমিন মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি আশা করছেন, রমজানের আগেই তারা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।

টিসিবির পণ্য সংগ্রহ সম্পর্কে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘রমজানের জন্য টিসিবির পণ্য সংগ্রহের উদ্যোগই বিলম্বে শুরু হয়। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের গড়িমসির কারণে টিসিবির প্রস্তাব পাস হতেও অতিরিক্ত সময় লেগে যায়। ’

বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হাবিব জানান, এবছর রমজান মাসে দেশে চিনির চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে দেশের কারখানাগুলোর উৎপাদনক্ষমতা আছে এক লাখ ৫৪ হাজার টন। বাকি চিনি আমদানি করে চাহিদা মেটানো হবে।

টিসিবির চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান অবশ্য আশা করছেন, রমজানের আগেই প্রয়োজনীয় পণ্য তাদের হাতে এসে পৌঁছাবে।      

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ১১ জুলাই ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।