ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

এ বছর প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স এসেছে

গাজী জহিরুল ইসলাম<br> সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১০
এ বছর প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স এসেছে

ঢাকা: বিশ্বের শ্রমবাজারে বাংলাদেশের প্রায় ৭০ লাখ লোক কাজ করেন। চলতি বছরে কর্মসূত্রে বিভিন্ন দেশে আরও তিন লাখ লোকের বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।



২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রবাসীদের কাছ থেকে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স এসেছে। এটা বিগত অর্থবছরের (২০০৮-০৯) তুলনায় আট হাজার কোটি টাকা বেশি।

বিশ্বের শতাধিক দেশের শ্রমবাজারে জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে যে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে।

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ১৯৭৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৭৬ সালে সৌদি আরবে ২১৭ জন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক হাজার নয়শ’ ৯৮ জন, কুয়েতে আটশ’ ৪৩ জন, কাতারে এক হাজার দুশ’ ২২ জন, ওমানে একশ’ ১১ জন, বাহারাইনে তিনশ’ ৩৫ জন, লিবিয়ায় একশ’ ৭৩ জন এবং অন্য সব দেশে এক হাজার তিনশ’ ৯৫ জনসহ মোট ছয় হাজার ৬৭ জনের কর্মসংস্থান হয়। এর মাধ্যমে ২৩.৭১ হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়।

এসব দেশের বাইরে ১৯৭৯ সালে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়। লেবানন, ব্রুনাই ও মরিশাসে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয় ১৯৯২ সালে। ১৯৯৪ সালে দণি কোরিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়। সরকারের হিসাব অনুযায়ী শীর্ষ ২৫টি দেশের শ্রমবাজারে এখন ৬৭ লাখ ৪১ হাজার ১৮৭ জন বাংলাদেশী কাজ করছেন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় শতাধিক দেশে বাংলাদেশী কর্মীরা গমন করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ২৫টি দেশের শ্রম বাজারে দক্ষ-অদক্ষ মিলে ৬৭ লাখ ৪১ হাজার ১৮৭ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

বেশি জনশক্তি নেয় এমন দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়েছে আছে সৌদি আরব। বর্তমানে সৌদি আরবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ১২৮ জন বাংলাদেশী কাজ করছেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ লাখ ৮৭ হাজার চারশ’ ৮৩ জন, কুয়েতে ৪ লাখ ৪৮ হাজার পাঁচশ’ ৭১ জন, ওমানে তিন লাখ ৮০ হাজার পাঁচশ’ ২৪ জন, কাতারে একলাখ ৫৫ হাজার সাতশ’ ২৩ জন, বাহারাইনে একলাখ ৮১ হাজার একশ’ ৮১ জন, লেবাননে ৩০ হাজার পাঁচশ’ ৩৩ জন, জর্ডানে ২৪ হাজার সাতশ’ ৬৯ জন, লিবিয়ায় ২২ হাজার আটশ’ ৪২ জন, সুদানে ৭ হাজার সাতশ’ ৪৮ জন, মালয়েশিয়ায় ৬ লাখ ৯৮ হাজার সাতশ’ ৩৮ জন, সিঙ্গাপুরে দুই লাখ ৭৬ হাজার পাঁচশ’ ৯৭ জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২১ হাজার চারশ’ ১৪ জন, যুক্তরাজ্যে নয় হাজার আটশ’ ১৬ জন, ইতালিতে ২৫ হাজার, একশ’ ৯২ জন, জাপানে সাতশ’ ২৩ জন, মিশরে ৬ হাজার নয়শ’ ১১ জন, ব্রুনাইয়ে ২১ হাজার ২৫ জন, মরিশাসে ১৩ হাজার পাঁচশ’ ৪০ জন, রুমানিয়ায় একহাজার ৫৯ জন।

জনশক্তি রপ্তানির ব্যাপারে শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, বর্তমানে যে সব দেশে জনশক্তি রপ্তানি করা হচ্ছে তার বাইরে ইরাক, সুদান, গ্রিস, পোল্যান্ড, তানতাজানিয়া, অ্যাঙ্গোরা, আলজেরিয়া, আজারবাইজান, নাইজেরিয়া, বোতসোয়ানা ও লাইবেরিয়ার শ্রমবাজারে অচিরেই বাংলাদেশের জনশক্তি পাঠানোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।

মন্ত্রী জানান, আগামীতে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির জন্য দেশে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং প্রোগাম চালু হচ্ছে। এখন সাতশ’ জন ডাক্তার, সাতশ’ ৬০ জন নার্স ও দুই হাজার নয়শ’ ৪৯ জন ইঞ্জিনিয়ার বিদেশে কর্মরত আছেন।
 
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল এ পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৭০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।