ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পুঁজিবাজারে ধস, বিক্ষোভ, ভাংচুর

এসএম গোলাম সামদানী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১০
পুঁজিবাজারে ধস, বিক্ষোভ, ভাংচুর

ঢাকা: পুঁজিবাজারে স্মরণকালের সবচেয়ে বিপর্যয়কর দরপতন হয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৫৫১ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ৬৫৪ দশমিক ৪০ পয়েন্টে নেমে আসে।

এটি পুঁজিবাজারের ইতিহাসে একদিনে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর ডিএসইতে সাধারণ মূল্যসূচক ২৮৪ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট এবং ১৯৯৬ সালের ৬ নভেম্বর সূচক কমেছিল ২৩৩ পয়েন্ট।

রোববার বাজারে বড় ধরনের দরপতনের কারণে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা মিছিলসহ রাস্তায় নেমে আসেন। এসময় তারা মতিঝিল-যাত্রাবাড়ী রাস্তা ২ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এতে ওই এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। দুপুর ২টার দিকে বিনিয়োগকারীরা স্বেচ্ছায় রাস্তা ছেড়ে চলে গেলে তবেই যানচলাচল আবার শুরু হয়।

রাস্তা থেকে বিুব্ধ বিনিয়োগকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। এসময় বিনিয়োগকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। ইটের আঘাতে দৈনিক কালের কণ্ঠের ফটোসাংবাদিক খোরশেদ আলম রিংকু গুরুতর  আহত হন।

এদিকে, রোববার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৪৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৫টির, কমেছে ২৩৬টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ২টি কোম্পানির শেযারের দাম। এদিন লেনদেন শুরু হয় দরপতন দিয়েই এবং শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। দিনশেষে ডিএসইতে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রকৌশল এবং সিমেন্ট  খাতের শেয়ারে বড় ধরনের দরপতন হয়।  

অন্যদিকে, ব্যাপক দরপতনের কারণে সকালে এসইসি পূর্বঘোষিত মেম্বার মার্জিন স্থগিত করে দেয়। তারপরেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় বিকালে মার্জিন লোন অনুপাত বাড়িয়ে ১ঃ১ থেকে বাড়িয়ে ১ঃ১.৫ করে। একইসঙ্গে এনএভি‘র ভিত্তিতে মার্জিন লোন প্রদান করাও বাতিল করে দেয়। এটি সোমবার থেকে কার্যকর হবে।

বাজারের ব্যাপক দরপতর সম্পকে ডিএসই সভাপতি শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে বাজারে কিছুটা তারল্য সংকট (নগদ মুদ্রার সংকট) দেখা দিযেছে। আর এই কারণে বাজারে আজকে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। তবে বিনিয়োগবারীদের এই মুহূর্তে আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দেয়া ঠিক হবে না। বাজার দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ’

ডিএসইর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দেওয়ায় অনেক বিনিয়োগকারী এ মুহূর্তে বাজারে প্রবেশ করছে না। দ্বিতীয়ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার কারণে বাজার এক ধরনের  অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই। বিনিয়োগকারীদের কোনো অবস্থাতেই লোকসানে মৌলভিত্তি সম্পন্ন শেয়ার বিক্রি করা ঠিক হবে না। বরং তাদের এখন মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করা উচিত। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।