ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘উড়ালপথের দরপত্র প্রক্রিয়ায় সেতু বিভাগ আদালত অবমাননা করেছে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০
‘উড়ালপথের দরপত্র প্রক্রিয়ায় সেতু বিভাগ আদালত অবমাননা করেছে’

ঢাকা: রাজধানীর যানজট নিরসনে বহুল আলোচিত উড়ালপথ ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ণে আদালত অবমাননা করেছে প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ। এ অভিযোগ সিকদার রিয়েল এস্টেট-কেসিসি জেভি’র।



তাদের অভিযোগ উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না মেনে বুধবার দুপুরে সেতু বিভাগ তড়িঘড়ি করেই গোপনীয়তার মধ্যদিয়ে শুধুমাত্র ‘ইতাল-থাই ডেভলপমেন্ট কোম্পানি’র আর্থিক প্রস্তাবের দরপত্র খোলে।   বুধবার সন্ধ্যায় গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরীয় যৌথ বিনিয়োগের সিকদার রিয়েল এস্টেট-কেসিসি জেভির চেয়ারম্যান রিক হক সিকদার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনার কথা জানানো হলেও সেতু বিভাগ শুধু ইতাল-থাইয়ের আর্থিক প্রস্তাব খোলে। এসময় দরপত্র মূল্যায়ণ কমিটির সদস্যদের বাইরে ইতাল-থাইয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ’

রিক হক আরও বলেন, ‘বুধবার বেলা এগারোটা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সভাকক্ষের দরজা বন্ধ করে ইতাল থাইয়ের দরপত্র খোলা হয়। এসময় সিকদার রিয়েল এস্টেট-কেসিসি জেভি’র প্রতিনিধিকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। দরপত্র যাচাই প্রক্রিয়ায় কোনো পক্ষকে বাইরে রেখে এভাবে গোপনীয়তার সঙ্গে দরপত্র খোলার রীতি নেই এবং এটি দরপত্রের শর্তও লংঘন। ’

সিকদার রিয়েল এস্টেট-কেসিসি জেভির চেয়ারম্যান রিক হক সিকদার বলেন, ‘সেতু বিভাগ শুধু আদালতই অবমাননা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং দরপত্রে অংশগ্রহণকারী হিসেবে তাদের অধিকারও হরণ করেছে। ’

সিকদার রিয়েল এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার বলেন, ‘বুধবার সকালে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মুহাম্মদ জাকিরের আদালতে রিট করেন তারা। ’

তিনি বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়মের আশঙ্কায় তারা এ রিট করেন। তাদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় আদালত সেতু বিভাগকে নির্দেশনা দেন। এতে বলা হয় চূড়ান্ত দরপত্রে অংশ নেওয়া দুইটি প্রতিষ্ঠানেরই আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়ণ করতে হবে এবং সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিকে চূড়ান্ত যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাছাই করার সুযোগ দিতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘সেতু বিভাগ এর আগে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন সময় তারিখ পরিবর্তন করলেও বুধবার তড়িঘড়ি করে ইতাল-থাইয়ের দরপত্র খোলে। এটি সিকদার রিয়েল এস্টেট-কেসিসি জেভির সঙ্গে একটি ষড়যন্ত্র। ’

রিক হক সিকদার বলেন, ‘যোগাযোগমন্ত্রী প্রভাব খাটিয়ে দরপত্র মূল্যায়নে অন্যায়ভাবে তাঁদের বাদ দিয়ে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয়ে ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ’

সিকদার রিয়েল এস্টেট-কেসিসি জেভির কর্মকর্তাদের দাবি, ‘ইতাল-থাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা রয়েছে। ’

সিকদার রিয়েল এস্টেট-কেসিসি জেভির চেয়ারম্যান রিক হক সিকদার জানান, তারা দরপত্রে সবমিলিয়ে আট হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন। অন্যদিকে ব্যাংক গ্যারান্টির তথ্য অনুযায়ী ইতাল-থাই প্রস্তাব করেছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। ইতাল-থাইকে কাজ দেওয়া হলে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বেশি হবে। এতে সরকারেরও প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।

এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) ভিত্তিতে কাজটি হবে বলে ব্যয়ের ৩০ শতাংশ বহন করতে হবে সরকারকে। ফলে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। ’  

রাজধানীর যানজট নিরসনের এ প্রকল্পটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে কুড়িল-বনানী, তেজগাঁও-সাতরাস্তা, মগবাজার লেভেলক্রসিং-খিলগাঁও-কমলাপুর-গোলাপবাগ হয়ে কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।