ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পেট্রাপোল বন্দরে ওয়ারহাউজ না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে রফতানি বাণিজ্য

জামাল হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০
পেট্রাপোল বন্দরে ওয়ারহাউজ না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে রফতানি বাণিজ্য

বেনাপোল : ভারতীয় পেট্রাপোল বন্দরে ওয়ারহাউজ না থাকায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারতে পণ্য রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রফতানিকারকরা।

তারা আরও জানান, জায়গা সংকটের কারণে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে রফতানি পণ্য খালাস করতে হচ্ছে।

রোদ বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে অনেক পণ্য নষ্টও হয়ে যাচ্ছে বলে রফতানিকারকরা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ থেকে প্রধান প্রধান রফতানিকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে কাঁচা পাট, পাটজাত  দ্রব্য (পাটের ব্যাগ, পাটের সূতা), সুপারি, ধান-চালের কুঁড়া, কর্টন র‌্যাগস (বর্জ কাপড়), রাবার শিট, হস্তশিল্পজাত পণ্য, পিতলের স্ক্যাপ, ওভেন প্যান্ট (ছেলেদের), শার্ট (পুরুষ), ব্যাটারি, হেসিয়ান কথ, ফলের রস (জুস), সাবান, স্বচ্ছ কাচ, তাজা মাছ, সিরামিক টাইলস, মেহগনি ফল ইত্যাদি।
 
বেনাপোলের রফতানিকারক মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজের মালিক আমিনুল হক আনু জানান, বর্তমানে প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে রফতানি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ ট্রাক পণ্য, ভারত থেকেও আমদানি হয়ে আসছে ৩২০ থেকে ৩৫০ ট্রাক পণ্য। আগের চেয়ে রফতানি বেড়েছে তিন গুন। কিন্তু ভারতীয় বন্দর কর্তৃপক্ষ পেট্রাপোল বন্দরে রফতানি পণ্যের জন্য ওয়ারহাউজ তৈরি না করায় নো-ম্যান্স ল্যান্ডে পণ্য খালাস করতে হচ্ছে। এছাড়া পেট্রাপোল বন্দরে স্থান সংকটের কারণে দিনের পর দিন রফতানি পণ্য নিয়ে রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বাংলাদেশি ট্রাকগুলোকে। ফলে ট্রাক ডেমারেজসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ভারতের আমদানিকারকরা রফতানি পণ্যের সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত করছে।
 
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন জানান, ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য রক্ষনাবেক্ষণের জন্য বেনাপোল বন্দরে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকলেও পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশি পণ্য খালাস ও ট্রাক চালকদের সুবিধার্থে কোনো ব্যবস্থা আজও পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেনি। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে এদেশের রফতানিকারক ও ট্রাক চালকদের ভারতে পণ্য রফতানি করতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এসব সমস্যা সমাধানে আমরা একাধিকবার পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনো ফল হয়নি।

বেনাপোল স্থলবন্দর ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন জানায়, পেট্রাপোল-বেনাপোল চেকপোস্টের নো-ম্যান্সল্যান্ডে রফতানি পণ্য খালাস করতে গিয়ে যানজটের কারণে ভারতীয় বিএসএফের হাতে প্রতিনিয়ত আমাদের ট্রাক চালকরা লাঞ্ছিত ও মারপিটের শিকার হচ্ছে। গত ২ মাস আগে এক ট্রাক চালককে চালানও দিয়েছে ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

বেনাপোল বন্দরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমিন জানায়, ভারতীয় ট্রাক ও আমদানি পণ্য রক্ষনাবেক্ষণের জন্য বেনাপোল বন্দরে ৬০ একর জমিতে ৩২টি গুদাম বা শেড, ৩টি ওপেন শেড, ১টি ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড, এক হাজার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ভারতীয় ট্রাক পার্কিং রয়েছে। এছাড়া ভারতীয় ট্রাক চালকদের বন্দরের অভ্যন্তরে গোসল করা বাথরুম ব্যবহারসহ খাওয়ার জন্য হোটেলের ব্যবস্থা থাকলেও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশি ট্রাক চালকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই।

বাংলাদেশ সময় : ১৬৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad