ঢাকা: সাধারণ ক্রেতার হাতে ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য তুলে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.। রোববার রাতে রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে এ লক্ষ্যে অগ্রণী ব্যাংকসহ আটটি ব্যাংকের সঙ্গে ২০০ কোটি টাকার একটি চুক্তি করে বসুন্ধরা গ্রুপ।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এসময় বলেন, কেবল মুনাফা নয়, ক্রেতার হাতে তার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে মানসম্পন্ন খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়ার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আজ থেকে দুই যুগ আগে বসুন্ধরা গ্রুপ যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এ গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
বসুন্ধরা কাগজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, মেঘনা সিমেন্ট ক্রমেই হয়ে উঠছে দেশের শ্রেষ্ঠ সিমেন্ট প্রস্তুতকারক। শিগগিরই এ সিমেন্ট বসুন্ধরা সিমেন্ট হিসেবে নতুন ব্র্যান্ডিং পাবে বলেও জানান তিনি।
আহমেদ আকবর সোবহান আরও বলেন, বসুন্ধরা এলপি গ্যাস দেশে জ্বালানি সঙ্কট সমাধানে অবদান রাখছে। নদীগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে ড্রেজিংয়ের কাজ করা হচ্ছে এ গ্রুপের আওতায়।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় ক্রেতার হাতে সঠিক ও মানসম্মত ভোগ্যপণ্য তুলে দিতে নতুন করে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ চালু করা হচ্ছে।
চুক্তিতে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও আটটি ব্যাংকের পক্ষে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আবদুল হামিদ স্বাক্ষর করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি সান পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ঊর্ধ্বতন উপ-ব্যবস্থাপক বেলায়েত হোসেন, উপদেষ্টা (তথ্য ও গণমাধ্যম) আবু তৈয়ব, নির্বাহী পরিচালক মাহমুদ হোসেন, মহা-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) শওকত আকবরসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অর্থনৈতিক উন্নতি ও জাতীয় প্রবৃদ্ধিকে সামনে রেখে দেশ ও জনগণের কল্যাণে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে নারায়ণগঞ্জের পানগাঁওয়ে শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলছে। সেখানে ভোজ্যতেল শোধনাগার, মিনারেলযুক্ত আন্তর্জাতিক মানের বোতলজাত নিরাপদ পানি প্রস্তুতকরণ কারখানা, আটা ও ময়দা কারখানা এবং গুঁড়া মশলা প্রস্তুত ও মোড়কজাতকরণ কারখানাসহ বেশ কিছু মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে।
৪৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের আধুনিকায়ন ও উৎপাদন সম্প্রসারণের জন্য ধাপে ধাপে আরও বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এ প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় মেটাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় আটটি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে এতে বিনিয়োগ করবে। এদের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক দেবে ৭২ কোটি টাকা, পূবালী ব্যাংক ৩০ কোটি, রূপালী ব্যাংক ৩০ কোটি, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক (এনসিসি) ২০ কোটি, ঢাকাব্যাংক ২০ কোটি, এবি ব্যাংক ১০ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ৮ কোটি এবং সৌদি-বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি ১০ কোটি টাকা।
এ প্রকল্পে তিন হাজার লোকের প্রত্যক্ষ ও ১২ হাজার লোকের পরোক্ষ কর্মসংস্থানের হবে বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ।
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আব্দুল হামিদ ছাড়াও, রূপালী ব্যাংক লি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ উদ্দিন, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এ চৌধুরী, ঢাকা ব্যাংক লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার ফজলে রশীদ, আরব বাংলাদেশ ব্যাংক লি এর উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান, এনসিসি ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো নুরুল আমিন এবং পূবালী ব্যাংক লি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমেদ চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময় ২১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১০