ঢাকা: ঋণ খেলাপিদের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি)। আগামী ১৬ জানুয়ারির মধ্যেই অনলাইনে খেলাপিদের তালিকাসহ ঋণের পরিমাণ পাওয়া যাবে।
ঋণ খেলাপিদের চিহ্নিত করা এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যেই সিআইবি’র নিজস্ব ওয়েবসাইট চালু করা হচ্ছে। এ ওয়েবসাইটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তালিকাভূক্ত তফসিলি ব্যাংক এবং ব্যাংকবর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল খেলাপির তালিকা প্রকাশ করা হবে।
পাশাপাশি খেলাপিঋণের তথ্যও দেওয়া হবে। যাতে খেলাপিদের তালিকা ও খেলাপি ঋণের সার্বিক তথ্য সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে সিআইবি রিপোর্ট ম্যানুয়ালি তৈরি করা হতো। এতে ব্যাংকঋণ পেতে আগ্রহী গ্রাহকদের বেশ ঝামেলা পোহাতে হতো। কারণ সিআইবি রিপোর্ট পেতে এক থেকে দু’মাস সময় লাগত। কিন্তু সিআইবি’র নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি হলে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা গ্রাহকদের সম্পর্কে সার্বিক তথ্য মিনিটের মধ্যেই জানতে পারবেন। গ্রাহকদের সম্পর্কে সার্বিক তথ্য জানার পর যারা খেলাপী নন তাদের ঋণ দেবে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এতে একদিকে খেলাপিদের দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে, অন্যদিকে খেলাপী ঋণের পরিমাণও কমে যাবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী মহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, যাতে ঋণ খেলাপিদের চটজলদি চিহ্নিত করা যায় এবং বিদ্যমান খেলাপিঋণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে নামিয়ে আনা সম্ভব হয় এ লক্ষ্যেই সিআইবি’র নিজস্ব অনলাইন চালু করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সিআইবির ওয়েবসাইট প্রকাশ করা হলে ব্যাংকিং খাত তথা দেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। পরিবর্তন আসবে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপিতে)। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। উন্নত ও আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যেই গভর্নর এ উদ্যোগ নিয়েছেন।
জানা গেছে, সিআইবি অনলাইন করার জন্যে ইতালির ভেন্ডার সফটওয়ার আনা হয়েছে। এতে মোট প্রায় ৫৬ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সিআইবির ওয়েবসাইট চালু করার লক্ষ্যে ৪৭টি ব্যাংক ও ২৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে খেলাপিদের তথ্য-উপাত্ত এবং খেলাপি ঋণের পরিসংখ্যান চাওয়া হয়েছে।
আগামী ১৫ ডিসেম্বেরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সকল তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে । এর আগের বছর ওই একই সময়ে ছিল প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১০