ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

চেয়ারম্যানকে না জানিয়েই নির্দেশনা জারি করেছিল এসইসি!

এসএম গোলাম সামদানী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১০
চেয়ারম্যানকে না জানিয়েই নির্দেশনা জারি করেছিল এসইসি!

ঢাকা: নেটিং ও চেক সম্পর্কিত বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুই নির্দেশনা জারি পুঁজিবাজারে বুধবারের বড় ধরনের দরপতনের কারণ হলেও এ বিষয়ে জানতেনই না খোদ এসইসি প্রধান জিয়াউল হক খোন্দকার।

নেটিং সুবিধার অপব্যবহার ও চেক জমার পর কিয়ারিং শেষে নগদ টাকা জমা না হওয়া পর্যন্ত ওই টাকায় শেয়ার কেনার প্রবণতা বন্ধে সোমবার নির্দেশনা দুটি জারি করা হয়।

বুধবার থেকে এটি কার্যকারিতা পায়। আর এর ফলে দিনের শুরুতেই বাজারে একদিনের ইতিহাসে সবচেয়ে বিপর্যয়কর দরপতনের ঘটনাটি ঘটে।

বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাধারণ সূচক নামতে নামতে ৫৪৭ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট গিয়ে ঠেকে।   এরপর সাধারণ ও ুদ্র বিনিয়োগকারীরা সহিংস বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে আসার পর সূচক আবার উঠতে শুরু করে। এ কারণে স্মরণকালের ভয়াবহতম সূচক পতনের পরও দিন শেষে তা  গতদিনের চেয়ে ১৩৪ পয়েন্ট নিচে অবস্থান করে। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে নির্দেশনা দু’টি স্থগিত করতে বাধ্য হয় এসইসি।  

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) একটি সূত্র জানিয়েছে, চেয়ারম্যানের অনুমোদন ছাড়াই ওই দুই নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল।

এই বিতর্কিত নির্দেশ জারির আগে এসইসির চেয়ারম্যানের অনুমোদন কেনা নেওয়া হলো না এ প্রশ্নটি এখন সামনে চলে এসেছে । সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এর সঙ্গে এসইসির জুয়ারিদের কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ করছেন। তারা এ ব্যাপারে খোদ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সেইসঙ্গে তারা এর জন্য অর্থমন্ত্রীর নিষ্ক্রিয়তাকেও দায়ী করছেন।    

এসইসি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকারের কাছে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় তার অনুমোদন ছাড়া কীভাবে এ দুটি নির্দেশনা জারি করা হলো। কিন্তু এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে তিনি শুধু বলেন, ‘এ মুহূর্তে কিছু বলা ঠিক হবে না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্দেশনা দু’টি স্থগিত করা হয়েছে। ’

অবশ্য এসইসি সদস্য মনসুর আলমের কাছে পরোক্ষভাবে এ ব্যাপারে  জানতে চাওয়া হলে তিনি স্বীকার করে নেন যে, নির্দেশ দুটি জারির আগে চেয়ারম্যানের অনুমোদন নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, ‘তবে নির্দেশনা জারির পর বিষয়টি তাকে (চেয়ারম্যান) অবহিত করা হয়েছে। ’

তার দাবি, ‘পুরনো বিধি কার্যকর করার জন্য কোনও নির্দেশনা জারি করা হলে অনেক সময় অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে অনুমোদন না নেওয়ার পেছনে অন্য কোনও কারণ ছিল না। ’

পাশাপাশি এসইসির এই সদস্য নির্দেশনা দুটি জারি করে পরে সেগুলো স্থগিত করার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘নেটিং সুবিধা বা চেক জমার বিষয়ে কমিশন নতুন কোনও বিধিমালা জারি করেনি। এ বিষয়ে আগে থেকেই সুনির্দিষ্ট বিধি কার্যকর ছিল। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান এসব নিয়ম কার্যকর না করে নেটিং সুবিধা ও মার্জিন ঋণের অপব্যবহার করে আসছিল। তাই এ ধরনের অনিয়ম বন্ধের জন্য কমিশন নতুন করে নির্দেশনা জারি করে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।