ঈদুল আজহা উপলক্ষে চামড়া সংরক্ষণে সরকারের বিশেষ উদ্যোগের ফলে এ বছর ৯ হাজার ৩৩০টি এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোতে প্রাথমিক হিসাবে ১৩ লাখ ৮ হাজার কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা গতবছর কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া সংরক্ষণ হয়েছিল ২ লাখ ৯ হাজারটি চামড়া।
বুধবার (১১ জুন) শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানিকৃত পশুর চামড়া লবণ দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সংরক্ষণের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) পূর্ব থেকে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ের চাহিদা অনুযায়ী লবণের মজুত নিশ্চিতকরণ, সঠিকভাবে চামড়া ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পদ্ধতির বিষয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, দৈনিক পত্রিকা, টিভি চ্যানেলে প্রচারণাসহ অসংখ্য লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনগণকে এ কাজে উৎসাহ ও সচেতন করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের মাধ্যমে যাতে উপযুক্ত মূল্য পায় সেজন্য সরকার এই প্রথম এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। সরকারের এ বিশেষ উদ্যোগের ফলে গতবছর এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংগুলোতে যেখানে ২ লাখ ৯ হাজার চামড়া সংরক্ষণ করেছিল, সেখানে এ বছর ৯ হাজার ৩৩০টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক হিসাবে ১৩ লাখ ৮ হাজার চামড়া সংরক্ষণ করেছে। এছাড়া সারা দেশব্যাপী আড়তদার, ব্যবসায়ী, ট্যানারি মালিকরা স্ব স্ব ব্যবস্থাপনায় নিজস্ব অর্থায়নে লবণ সংগ্রহ করে চামড়া সংরক্ষণ করেছে।
২০২৫ সালে পশুর চাহিদা অনুযায়ী চামড়া সংরক্ষণে লবণের প্রয়োজন ধরা হয়েছিল ৬১ হাজার ৭৪৮ মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণের মজুত করা হয়েছিল ৯৩ হাজার ২২৯ মেট্রিক টন। জেলায় চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণের পর্যাপ্ত মজুদ ছিল, কোথাও কোনো ঘাটতি ছিল না। তার সত্ত্বেও দেশের কয়েকটি স্থানে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে যা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী কর্তৃক চামড়ার লবণ না দিয়ে আড়তদারদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে দরকষাকষি ও আড়তদার কর্তৃক চামড়া ক্রয় অনীহা প্রকাশ করায় মূল্যবান চামড়া নষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আরো জানানো হয়, এ বছর সাভার ট্যানারি নগরস্থ সিইটিপিতে প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল মজুদ, ইঞ্জিনের ওভারহলিং ও পুকুর খননসহ অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কাজ আগেই সম্পন্ন করা হয়েছে। কোরবানিকৃত পশুর মাথা, লেজ ও অন্যান্য অংশ ডাম্পিং ইয়ার্ড ও অন্যান্য স্থানে না ফেলার জন্য আগেই সকল ট্যানারি মালিককে নির্দেশনা দেওয়া হয়। ৮ টিকে প্রতিষ্ঠানকে ট্যানারির বাইরে নিয়ে বিক্রি করার অনুমতিও দেওয়া হয়। লক্ষ্য করা গেছে যে, অল্প কিছু মাথা লেজ ইত্যাদি নদীর পাড়ে ফেলেছে শিল্পনগরী ও সিইপিটির অজ্ঞাতসারে। আর যাতে কেউ এগুলো কোথাও ফেলতে না পারে সেজন্য সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
জিসিজি/এসএএইচ