ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৬ জুন ২০২৫, ০৯ জিলহজ ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফিকির প্রতিক্রিয়া

‘কর চাপানোর কাঠামো থেকে এবারের বাজেটও বের হতে পারেনি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৫৯, জুন ৪, ২০২৫
‘কর চাপানোর কাঠামো থেকে এবারের বাজেটও বের হতে পারেনি’ বুধবার গুলশানে নিজস্ব কার্যালয়ে বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে ফিকির নেতারা

করের বোঝা চাপানোর কাঠামো থেকে এবারের বাজেটও বের হতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছে ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) নেতারা।

বুধবার (৪ জুন) গুলশানে সংস্থাটির নিজস্ব কার্যালয়ে বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করে ফিকি।

 

প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট জাভেদ আক্তার জাভেদ আক্তারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি রুপালী চৌধুরী ও নাসের এজাজ বিজয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ফিকির উপদেষ্টা স্নেহাশিস বড়ুয়া।

প্রস্তাবিত বাজেটে সংশোধিত কর স্ল্যাব অনুযায়ী যেসব বেতনভুক্ত ব্যক্তি মাসে ৭০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করেন তাদের ওপর করের বোঝা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বাড়তে পারে। একইভাবে এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা আয়ের ব্যক্তিদের জন্য এই কর বৃদ্ধির হার হবে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পাবে।  

এ সিদ্ধান্তকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছে ফিকি।

ফিকির প্রেসিডেন্ট জাভেদ আক্তার বলেন, সরকারের পক্ষে থেকে বলা হয়েছে এবারের বাজেট প্রবৃদ্ধিমুখী বাজেট নয়। বাজেট ছোট রেখে অর্থনীতিতে একটি স্থিতিশীল অবস্থানে নিতে কথা হয়তো সত্যি। কিন্তু বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের এই অবস্থানে নিরুৎসাহিত হবে।

ফিকির সাবেক সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, যারা কর দেয় তাদের ওপরেই করের বোঝা চাপানোর মতো কর কাঠামো থেকে এবারের বাজেটেও বের হতে পারেনি। ফলে পুরাতন করদাতাদের কাছে থেকে আবারও বেশি বেশি কর নেওয়া হবে। এটা চিড়িয়াখানায় পশু শিকারের মতো। এ ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে যারা কর দেয় না বা ফাঁকি দেয় এবং ঢাকা চট্টগামের বাইরেও করের নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করতে হবে।

দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আইনগত প্রতিকূলতা ও শেয়ার হোল্ডারদের নিয়ে এজিএম করার ঝক্কির কারণে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবে, মন্তব্য করেন ফিকির আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট রুপালী চৌধুরী।

প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, অনলাইন বিক্রয় খাতে ভ্যাটহার ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে বৃদ্ধি করায় দেশের উদীয়মান ডিজিটাল বাণিজ্য খাতের প্রবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। একইভাবে, বেভারেজ কনসেন্ট্রেটের ওপর কাস্টমস ডিউটি ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে এ বাড়ানোর ফলে পণ্যমূল্য ও শিল্পখাতের মুনাফার মার্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ফিকি উল্লেখ করে, কোম্পানির জন্য সর্বনিম্ন করহার শূন্য দশমিক ৬ থেকে ১ দশমিক এবং ব্যক্তির জন্য শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশে বাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে লস মেকিং প্রতিষ্ঠান ও মুদ্রাস্ফীতিতে জর্জরিত সাধারণ করদাতারা। উদাহরণস্বরূপ, কোনো কোম্পানি করযোগ্য আয় না করলেও তাকে টার্নওভারের ওপর ১ শতাংশ কর প্রদান করতে হবে, যা ইতোমধ্যে সংকটে থাকা প্রতিষ্ঠানের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করবে।

এছাড়াও, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের ১০ শতাংশের কম শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে, তাদের জন্য ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ করহার পুনরায় প্রবর্তন করাকে ফিকি বৈষম্যমূলক বলে অভিহিত করছে। এছাড়াও, নগদবিহীন লেনদেন করা কোম্পানিগুলোর জন্য হ্রাসকৃত হারের করের সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এটি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং একটি আনুষ্ঠানিক অর্থনীতি গঠনের লক্ষ্যের অন্তরায়।

জেডএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।