ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াই ৪ নভেম্বর শুরু হচ্ছে আবাসন মেলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১০

ঢাকা: বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াই এবার আবাসন মেলা ‘রিহ্যাব ভিশন-২০১০’ আয়োজন করতে যাচ্ছে দেশের আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব।

আগামী ৪ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত আগারগাঁওয়ে বাণিজ্য মেলার জন্য নির্ধারিত মাঠে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।



বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকালে মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসকাবে আয়েজিত এব সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানান সংগঠনের সভাপতি নসরুল হামিদ বিপু।

তবে এ মেলা নিয়ে আয়োজকরা খুব একটা আশাবাদী নন বলে জানান তিনি।

সাংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের নিউইয়র্কে কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত মেলার অভিজ্ঞতা আমাদের হতাশ করেছে। বৈশ্বিক মন্দায় প্রবাসীরা জমি ও ফ্যাটে বিনিয়োগ করতে পারছেন না। রেজিস্ট্রেশন ফি বাড়ায় দেশি বিনিয়োগকারীদের সংখ্যাও কমে গেছে। ’

তিনি জানান, দেশের ১৫ থেকে ১৮ ভাগ বাড়ি রিহ্যাব সদস্যরা তৈরি করে। বাকিগুলো ব্যক্তিমালিকানায় তৈরি হলেও নানা প্রতিকূলতার কারণে এখন সেটাও কমে গেছে।

গত বছর মধ্যবিত্তদের জন্য গৃহনির্মাণ বাবদ ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এ বছর কোনও বরাদ্দ নেই উল্লেখ করে রিহ্যাব সভাপতি এ খাতে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে সরকারের কাছে দাবি জানান।

এছাড়া কম সুদে বাড়ি ও ফ্যাট নির্মাণ করতে মধ্যবিত্তদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিপু নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত মেলায় মানবপাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, ‘দূতাবাস যথাযথভাবে মেলায় অংশ নেওয়া রিহ্যাব সদস্যদের কাগজপত্র পরীক্ষার মাধ্যমে ভিসা দিয়েছে। যারা ভিসা পাননি, তারাই এ ধরনের অভিযোগ করছে। ’

তিনি বলেন, ‘কোনও ব্যবসায়ী যুক্তরাজ্যে গিয়ে ব্যবসা ছেড়ে পালিয়ে থাকবে না। ’

সাংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের মেলায় টিকিট ও স্পন্সর থেকে ছয় কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। একজন দর্শনার্থী প্রতিবার ৫০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে মেলায় ঢুকতে পারবেন। তবে কেউ চাইলে ১০০ টাকায় একসঙ্গে পাঁচবারের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান রিহ্যাব সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘একটি দেশের আবাসন সরবরাহ তার সরকারের রাজনৈতিক কর্মসূচি। কিন্তু সীমিত সম্পদের এ দেশে সরকারের একার পক্ষে এ চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। এ কারনেই এ খাতে ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসে। ’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলদেশের (রিহ্যাব) ৭৮৫ সদস্য কাজ করে যাচ্ছে।   যার প্রধান উদ্দেশ্যই হলো একটি পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলা।

এছাড়া আবাসন ব্যবসায়ী এবং এর সহযোগী লিংকেজ শিল্প দেশের জাতীয় উন্নয়নের ১৫ ভাগ বা ২০ হাজার কোটি টাকার অবদান রাখছে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

নসরুল হামিদ বিপু তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমানে আবাসন শিল্প খারাপ সময় পার করছে। এর কারণ হিসেবে জমির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া, নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি, উচ্চমাত্রার ব্যাংক সুদ এবং সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কার্যালয়ে নকশা অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা এ খাতে ধ্বস নামাচ্ছে।

এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ২০০১ সালে শুরু করে রিহ্যাব এখন পর্যন্ত ঢাকায় নয়টি, চট্টগ্রামে চারটি, যুক্তরাষ্ট্রে আটটি এবং যুক্তরাজ্য, দুবাই ও রোমে একটি করে সফল আবাসন মেলা আয়োজন করেছে।

এবারের মেলায় ৩০৪ টি রিহ্যাব সদস্য ও দুইটি অর্থ লগ্নকারী প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৩০৬টি স্টল থাকবে।

মেলায় যমুনা-বসুন্ধরা হাউজিং লিমিটেড, ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাঃ) লিমিটেড, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিমিটেড, নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন, আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডসহ মোট ২৩টি কোম্পানি স্পন্সর করছে।

নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বিপু বলেন, ‘কোনও ক্রমেই রিহ্যাবের আগামী নির্বাচন পেছানো হবে না। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে।

নতুন গৃহনির্মাণ আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দেশে এ ধরনের আইন থাকা প্রয়োজন। তবে যেসব বিষয়ে রিহ্যাব একমত নয়, সে বিষয়ে সংশোধনের জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, ০২ নভেম্বর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।