ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পোশাক কারখানায় এখনও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েই গেছে: সিপিডি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
পোশাক কারখানায় এখনও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েই গেছে: সিপিডি

ঢাকা: ঢাকার সাভারের আলোচিত রানা প্লাজা ধসের পর তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কাজ শুরু হয়। গত ১০ বছরে কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে অনেক কাজ হলেও তা পুরোপুরি শেষ হয়নি।

ফলে পোশাক কারখানায় এখনও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েই গেছে।

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীতে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা: অর্জন ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানায় সংস্থাটি।

সিপিডির এ প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী তামীম আহমেদ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে, দেশে সর্বমোট ৮৫৬টি পোশাক কারখানা কোনো ধরনের তদারকি ব্যবস্থা নেই। যদিও তারা অপ্রচলিত বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে। এসব কারখানার কোনোটিতে দুর্ঘটনা ঘটলে পুরো পোশাক খাতের ওপর নতুন করে চাপ তৈরি হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানায় গত কয়েক বছরে অগ্নিদুর্ঘটনা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ২০২০ সালে ১৭৭টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছিল। গত বছর সেটি বেড়ে হয়েছে ২৪১টি।

অন্যদিকে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা এখনও শূন্যে নামেনি। ২০২১ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মারা যান ১৩ জন পোশাকশ্রমিক। আর গত বছর মারা গেছেন ৪ জন।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড এবং উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কাজ শুরু করে। অ্যাকর্ড চলে যাওয়ার পর দায়িত্ব নেয় আরএমজি সাসটেইনিবিলিট কাউন্সিল (আরএসসি)।

অন্যদিকে অ্যালায়েন্সের দায়িত্ব নেয় নিরাপন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আরএসসির অধীনে বর্তমানে ১ হাজার ৮৮৭টি কারখানা রয়েছে। আর নিরাপনে আছে ৩২০টি কারখানা। তবে বর্তমানে দেশে নিরাপনের কোনো কার্যক্রম নেই।

অন্যদিকে ‘সরকারের ত্রিপক্ষীয় কর্মপরিকল্পনার অধীনে আরসিসি’ শীর্ষক উদ্যোগের আওতায় যেসব কারখানায় তদারকি চলছিল, সেগুলো বর্তমান দেখছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি ইউনিট (আইএসইউ)। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) অধীন আইএসইউতে বর্তমানে ৬৭৯টি পোশাক কারখানা রয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, আইএসইউ'র অধীনে থাকা ৬৭৯ কারখানার ত্রুটি সংশোধন কাজ হয়েছে মাত্র ৫৪ শতাংশ। মাত্র ১টি কারখানা শতভাগ ত্রুটি সংশোধন কাজ শেষ করেছে।

অন্যদিকে আরএসসির অধীনে থাকা ১ হাজার ৮৮৭ কারখানার ত্রুটি সংশোধন কাজ শেষ হয়েছে ৯১ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত এপ্রিল পর্যন্ত ১ হাজার ৩১৭ কারখানা ত্রুটি সংশোধন করেছে ৯১-১০০ শতাংশ। ত্রুটি সংশোধনের কাজ এগোলেও অগ্নি নিরাপত্তায় ব্যবহৃত ব্যয়বহুল যন্ত্রপাতি স্থাপনে কারখানাগুলোর মধ্যে অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক মাসে আরএসসির ফলোআপ পরিদর্শন ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে। নিরাপত্তা ত্রুটি রয়েছে এমন কারখানার উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ করার মতো আইনি ক্ষমতা তাদের দেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে আরএসসি ও ডিআইএফইর মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ দরকার। অন্যদিকে আরএসসিকে ফলোআপ পরিদর্শন বাড়াতে হবে। কারখানা পরিদর্শনে বয়লারকে যুক্ত করা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৩
এমকে/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।