ঢাকা: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রপাগান্ডা আর বিধি তৈরিতে সরকারের দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ তুলে অচিরেই জাহাজ ভাঙা শিল্প ধংসের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানান তারা।
অ্যাসোসিয়েশনের সবাপতি জাফর আলম বলেন, ‘আমাদের জাহাজ ভাঙার অনুমোদন না দিলে আমরা এ শিল্প বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবো। এতে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে এবং রডসহ এ শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি শিল্পের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ’
তিনি বলেন, কিছুসংখ্যক এনজিওর প্রচারনায় ও ভুল তথ্যের উপর নির্ভর করে সরকার বিধিমালা তৈরি করছে। এতে জাহাজ ভাঙা প্রতিষ্ঠানগুলো এ দেশে জাহাজ আনতে পারবে না। ফলে বাংলাদেশ ভারত ও চীনের বাজারে পরিণত হবে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো যুদ্ধজাহাজ ও নিউকিয়ার জাহাজ আনা হয় না। তাই ভয়ের কিছু নেই। উপরন্তু এ শিল্পের শ্রমিকদের স্বাস্থ্যরক্ষায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। এনজিওরা যা বলছে তা স্রেফ প্রপাগান্ডা। ’
কারিগরি উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একটি জাহাজ এ দেশে আনার পর প্রস্তাবিত বিধি অনুযায়ী এ শিল্পের প্রক্রিয়াকরণে সাত মাস সময় লাগবে। আন্তর্জাতিক জাহাজ কোম্পানিগুলো আমাদের এতো সময় দেবে না। তখন আমরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারব না। ’
তিনি বলেন, ‘বিগত পাঁচ মাসে আমরা কোনো জাহাজ আমদানি করতে পারিনি। এখন যা মজুত আছে তাতে একমাস চলবে। এরপর সরকার অনুমতি না দিলে এ শিল্প ধংস হয়ে যাবে। তখন সরকারকেই এর দায়দায়িত্ব নিতে হবে। ’
সহ-সভাপতি কামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকার জাহাজ ভাঙার কাজে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক করলেও এ ব্যাপারে কোনো বিধি না থাকায় অধিদপ্তর তা দিচ্ছে না।
তিনি জানান, এ বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করলে আদালত জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাত শিল্প বিধিমালা তৈরির জন্য অধিদপ্তরকে তিনমাস সময় দেন। একই সঙ্গে অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার কথাও বলেন। তিনমাসের মধ্যে দুইমাস চলে গেছে। এখন বাকি একমাসের মধ্যে বিধি তৈরি সম্ভব না হলে এ শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ’
তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে এ শিল্পের বয়স প্রায় ৪০ বছর। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ২৫ লাখ লোক।
প্রতি বছর এ শিল্প থেকে ৮০০ কোটি টাকা রাজস্ব জমা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৯ ঘণ্টা, ০৩ অক্টোবর, ২০১০