ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মৃতপ্রায় মৃৎশিল্পীরা সরকারি সহায়তার আশায় আছেন

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১
মৃতপ্রায় মৃৎশিল্পীরা সরকারি সহায়তার আশায় আছেন মৃতপ্রায় মৃৎশিল্পীরা সরকারি সহায়তার আশায় আছেন। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): একটা সময় মানুষের নিত্য দিনের কাজে মাটির তৈরি তৈজসপত্রের ব্যবহার থাকলেও বর্তমানে প্লাস্টিকের সামগ্রীর বাড়ায় মৃতপ্রায় কুমার শিল্প। সরকার সামন্য নজর দিলে এই শিল্প আবার জেগে উঠবে বলে আশা করছেন মৃৎশিল্পীরা।

মাটির পর আসে লোহাসহ বিভিন্ন ধাতব পাত্রের ব্যবহার আর বর্তমান সময়ে প্লাষ্টিক এইসব জিনিসের জায়গা দখল করে নিয়েছে। এরপরও মাটির বাসনপত্রের ব্যাবহার হারিয়ে যায়নি। সিপাহীজলা জেলার চড়িলাম এলাকার চেচুড়ীমাইল এবং বড়জলা গ্রামের বেশ কয়েক পরিবারের এখনো জীবিকা নির্বাহের প্রধান মাধ্যম মাটি দিয়ে সামগ্রী তৈরি করা। আগে তারা মাটির অনেক ধরণের সামগ্রী তৈরি করলেও এখন শুধু মাটির থালা, মালসা বাটি, কলসি, পাতিল ইত্যাদি হাতে গোনা কয়েকটি সামগ্রী তৈরি করেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা এই গ্রামে আসে ও তাদের চাহিদামত সামগ্রী নিয়ে যান।

গ্রামের বাসিন্দা মানিক পাল, বয়স প্রায় ৮০বছর। কিন্তু এখনো নিজ হাতে এই সব সামগ্রী তৈরি করেন বলে জানান। পূর্বপুরুষের হাত ধরে এই পেশায় এসেছেন তিনি। এই কাজ করেই ছেলে মেয়েদের মানুষ করেছেন। যদিও এখন আর নতুন প্রজন্ম এই  কাজে আসতে চায় না, পরিশ্রম বেশি ও লাভ কম বলে। শারীরিক ভাবে সক্ষম থাকাকালীন সময়ে যে পরিমাণ সামগ্রী তৈরি করতে পারতেন এখন আর সেই পরিমাণে তৈরি করতে পারেন না বলে জানান। তারপরও পেটের তাগিদে শারীরিক সমর্থে যতটুকু সম্ভব ততটুকু সামগ্রী তৈরি করেন প্রতিদিন।

এই সব সামগ্রী তৈরির জন্য অন্য জায়গা থেকে জমির মাটি কিনে আনতে হয়। একটি পাতিল পাইকারের কাছে দশ থেকে বারো রুপি দামে বিক্রি করেন। কিন্তু স্থানীয় চড়িলাম এবং বিশ্রামগঞ্জ বাজারে নিয়ে বসে বিক্রি করলে আরো বেশি দাম পাওয়া যায় বলে জানান বিশাখা পাল নামের আরো এক মৃৎশিল্পী।

তবে উৎসবের মৌসুমে মাটির থালার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই দুর্গাপূজার সময় থেকে অগ্রহায়ণ মাসের হরিনাম সংকির্তণ পর্যন্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তারা। সরকার যদি তাদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিত, বিশেষ করে সরকারি অনুষ্ঠানে থার্মোকলসহ কাগজ ও প্লাষ্টির প্লেট, গ্লাসের পরিবর্তে মাটির থালা বা গ্লাস ব্যবহার করতো তবে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষদের জীবনে স্বচ্ছলতা ফিরে আসতো।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১
এসসিএন/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।