ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির হরতালে জনজীবন স্বাভাবিক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির হরতালে জনজীবন স্বাভাবিক বিজেপির হরতালে স্বাভাবিক পশ্চিমবঙ্গ। ছবি: বাংলানিউজ

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার ‘বাংলা বনধে’ মিশ্র প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। রাজ্যের কয়েকটি জেলা ছাড়া অর্থাৎ কোচবিহার, মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর ও বর্ধমান জেলায় বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। তবে অন্যান্য জেলায় ছিলো জন-জীবন স্বাভাবিক।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। সূত্র জানায়, কোচবিহার, মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর ও বর্ধমানে সরকারি ও বেসরকারি বাসে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া কোথাও কোথাও হরতালের সমর্থনে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মিছিলের ওপর হামলা করেছেন রাজ্যের ক্ষমতাসীন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা।  

অবশ্য পুলিশের তৎপরতায় তৎক্ষণাৎ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার অভিযুক্তদের আটকও করা হয়।  
 
স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলাগুলোতে মিশ্র প্রভাব পড়লেও অন্যান্য জেলাসহ কলকাতায় হরতালে সেরকম কোনো প্রভাব পড়েনি। সকাল থেকেই স্বাভাবিক আছে সপ্তাহের মাঝের ব্যস্ত জীবন। দিনের শুরুতে অফিস যাওয়ার তাড়া লক্ষ্য করা গেছে। বেসরকারি বাস বুধবার একটু কম চললেও মমতার নির্দেশে সরকারি বাস রাস্তায় ছিলো দ্বিগুন। কলকাতার স্কুলগুলো ছুটি ঘোষণা না করলেও হরতালে অশান্তির আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ছিলো কম। তবে হরতালে কোনো প্রভাবই পড়েনি কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।  

বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কলকাতাসহ আশেপাশের জেলা-শহরগুলোতেও বাস, ট্যাক্সি ও যাত্রীসংখ্যা নিত্যদিনের মতোই স্বাভাবিক আছে। তবে কলকাতার বড়বাজারে ব্যস্ততা স্বাভাবিক ছিলো না। বেশির ভাগ দোকান বন্ধ।  

সূত্র জানায়, বড়বাজার এলাকার কাউন্সিলর বিজেপি সমর্থিত। যদিও ব্যারাকপুর, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল এলাকায় হরতালের কোনো প্রভাব পড়েনি। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের এলাকা আসানসোলের জন-জীবন, কল-কারখানা, অফিস-আদালত সব কিছুই স্বাভাবিক রয়েছে।
 
তবে শহরতলী থেকে কলকাতার আসা ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। মধ্যমগ্রাম, অশোকনগর, ঠাকুরনগর, শান্তিপুর, বনগাঁওসহ একাধিক স্টেশনে রেললাইনে নেমে ও ওভারহেডের তারের ওপর কলাপাতা ফেলে হরতাল সমর্থনকারীরা অবরোধ করে।  

পরে রেল কর্তৃপক্ষ তা পরিষ্কার করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে। সকালের দিকে দূর-পাল্লার ট্রেন চলাচলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।  

২০১১ সালে মমতার সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে হরতাল এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা যাবে না এই নির্দেশিকা জারি করে সরকার। সে কারণে রাজ্যকে স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনিক ভবন নবান্ন থেকে সব জেলা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।  

জেলার পুলিশ সুপারদের বলা হয়েছে, বুধবার যেন রাজ্য সচল থাকে। যানবাহন চলাচলে কোনো বাঁধা দেওয়া না হয়। বাস, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার, দোকান খোলা রাখতে হবে।  

কেউ বাঁধা দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এদিকে নবান্নেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। যেখান থেকে গোটা রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
 
সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট স্কুলে পুলিশের গুলিতে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি বুধবার রাজ্যে ১২ ঘণ্টার (অর্ধ দিবস) হরতাল ডেকেছে। যা শেষ হবে স্থানীয় সময়ের সন্ধ্যে ৬টায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
ভিএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।