ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পঞ্চায়েত ভোট: মমতার চালে বিরোধী থেকে এগিয়ে তৃণমূল 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৮
পঞ্চায়েত ভোট: মমতার চালে বিরোধী থেকে এগিয়ে তৃণমূল 

কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দল তৃণমূল কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচন। রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনে বিরোধী শূন্য দখল পেতে এবারের পঞ্চায়েত ভোটে নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি যাচাই করে নিতে চাইছে দলটি।

সেদিক থেকে মমতার দল অনেকটা বিরোধীদের দিক থেকে এগিয়ে। আর সেই লক্ষ্যে গ্রামাঞ্চলে নিরঙ্কুশ রাজনৈতিক আধিপত্য কায়েম করতে তৃণমূল নেত্রীর প্রাথমিক চালেই বেসামাল কংগ্রেস, বামসহ কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপিও।

 

হঠাৎ করে পঞ্চায়েত ভোটের দিন নির্ধারণ করে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কমিশন। তাই হাতে সময় কম থাকায় তিন দফার ভোটে প্রার্থী জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে বিরোধীরা।  

অন্যদিকে, তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। বহু জায়গায় তাদের প্রার্থী প্রচারণার কাজও শুরু করে দিয়েছেন।  

পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের ৭০ শতাংশ ভোটার পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। তাই একদিকে যেমন বিজেপি বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সর্বভারতে ছুটে বেড়াচ্ছেন মমতা; পাশাপাশি রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট নিয়েও দলকে তৈরি করছেন তিনি।  

তারই সুবাদে নির্বাচনী তফসিল প্রকাশ হওয়া মাত্রই বিপাকে পড়েছে বিরোধী দলগুলো। আচমকা এমন ধাক্কায় বেসামাল বিজেপি, ইতোমধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেছে।  

মে দিবসে কেন ভোট? এই প্রশ্ন তুলছে বামেরা। কংগ্রেসের দাবি, ভোট লুটের উদ্দেশ্যেই খেয়ালখুশি মতো নির্বাচনের তফসিল দেওয়া হয়েছে।  

দু-তিনটি জেলার কয়েকটি গ্রাম ছাড়া গোটা রাজ্যেই তৃণমূলের বুথভিত্তিক সংগঠন যথেষ্ট পোক্ত। পঞ্চায়েত ভোটে মোট বুথ রয়েছে ৫৭ হাজারের কিছু বেশি।  

সব বুথে একজন করে কর্মী রাখাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিরোধীদের কাছে একপ্রকার অসম্ভব। রাজ্যে সাড়ে ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও সিপিএম-এরও প্রতি বুথে একজন করে কর্মী খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।  
গত ভোটে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ জিতলেও পরে তারা দল ভেঙে তৃণমূল চলে যায়।  

অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি এ রাজ্যে একপ্রকার নতুন। গত লোকসভা ভোট থেকে একটু একটু করে শক্তি বিস্তার করেছে এ রাজ্যে।  

বিজেপি নিজেও জানে সেভাবে পায়ের তলার মাটি শক্ত হয়নি পশ্চিমবঙ্গে। সে কারণে তারা ভোটের লড়াইয়ে তাদের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে শাসক দলের বঞ্চিত নেতা কর্মীদের নিয়ে মাঠে নামতে চাইছে।  

অর্থাৎ বিজেপি তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের টেনে পঞ্চায়েত ভোট মাত করতে চাইছে। দলের কোর কমিটির বৈঠকে নিজের তৈরি বিকল্প পথের কথা জানিয়ে দিয়েছেন মমতা।  

তৃণমূল থেকে বঞ্চিত বা দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন- এমন নেতাদের থেকে প্রার্থী বাছাইয়ের পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি।  

সে ক্ষেত্রে পাহাড়ি জেলা দার্জিলিং ও কালিম্পং বাদে মোট ২০টি জেলা পরিষদের মোট ৮২৫টি আসন, ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতির ৯ হাজার ২৪০টি আসন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮ হাজার ৭৫১টি আসনে প্রার্থী দেওয়াটাই বিরোধীদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

সোমবার (০২ এপ্রিল) থেকে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা শুরু হয়েছে। যা ৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে না পারলে সিংহভাগ পঞ্চায়েতের বিনা লড়াইয়েই জিতে যাবে শাসক দল; এমন সম্ভাবনাও মাথাচাড়া দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৮
ভিএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad