ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বামপন্থীরা শেষ হয়ে গেছে ভাবলে ভুল হবে: প্রকাশ কারাত

আনোয়ারুল করিম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১১
বামপন্থীরা শেষ হয়ে গেছে ভাবলে ভুল হবে: প্রকাশ কারাত

কলকাতা থেকে: কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মার্ক্সিস্ট) সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত বলেছেন,  বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআই(এম) ও বামফ্রন্টের বিদায়গাথা লেখা হয়ে গেছে বলে যারা ভাবছেন তারা ভুল ভাবছেন।

সোমবার নয়াদিল্লিতে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মার্ক্সিস্ট) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটি পলিটব্যুরোর বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে এ কথা জানিয়ে দেন দলের সাধারণ সম্পাদক।



রাজ্যের মানুষ এবার পরিবর্তনের জন্য মনস্থির করেছিলেন বলেই এই রকম ফল হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।  

পশ্চিমবঙ্গের সদ্য বিদায়ী মূখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দলের ১৪ সদস্যের পলিটব্যুরো থেকে পদত্যাগ করছেন না বলেও জানান তিনি।  

এদিন পলিটব্যুরো বৈঠকে নির্বাচনী ফলের প্রাথমিক পর্যালোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রকাশ কারাত জানান, রাজ্য কমিটিতে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার পর ১০ থেকে ১২ জুন হায়দরাবাদে কেন্দ্রীয় কমিটির  বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। সেই আলোচনার ভিত্তিতে দল পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেবে।

প্রকাশ কারাত বলেন, ‘এবার পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পরিবর্তনের জন্য মনস্থির করেছিলেন। সেই কারণেই নির্বাচনে বামপন্থীদের পরাজয় হয়েছে। ’

পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের কারণ এবং পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।  

ভোটে জেতার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সিপিআই(এম) এবং বামফ্রন্ট কর্মীদের ওপর তৃণমূল কংগ্রেসের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রকাশ কারাত বলেন, ‘গত দু’দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পার্টি দপ্তর, কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা হচ্ছে। ’  

গত ৩৪ বছরে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার তাৎপর্যপূর্ণ কৃতিত্ব অর্জন করলেও রাজনৈতিক, সরকারি এবং সাংগঠনিক কাজে ঘাটতি রয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে পরাজয় হলেও পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট ১ কোটি ৯৬ লাখ ভোট পেয়েছে। যা মোট প্রদত্ত ভোটের ৪১ শতাংশ। ’

২০০৯ সালে লোকসভা ভোটের তুলনায় এ নির্বাচনে ১১ লাখ ভোট বেড়েছে বামফ্রন্টের।

প্রকাশ কারাত বলেন, ‘২০০৯ সালে লোকসভা ভোটের পর ফলাফলের পর্যালোচনা করে পার্টি বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। ত্রুটি সংশোধনের কাজও চলে। এসব কাজের পরিপ্রেক্ষিতেই আমাদের সভা, সমাবেশে মানুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে। যা দেখে আমাদের মনে হয়েছিল রাজ্যে বামফ্রন্ট ফের সরকার গড়বে। ’

তিনি বলেন,  ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গে ১১ লাখ ভোট বাড়াতে পারলেও বিরোধীদের ৩৫ লাখ ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে। ’

প্রসঙ্গ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য:

পলিটব্যুরো থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ইস্তফার খবর উড়িয়ে দিয়ে প্রকাশ কারাত বলেন, ‘কেউ ইস্তফা দেননি বা ইস্তফা দেওয়ার কথাও বলেননি। ’  

তিনি বলেন ‘আমরা ইস্তফার খবর জানি না, এমনকি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও জানেন না। ’ পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্রের এমনটি মনে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবারের পলিটব্যুরো  বৈঠকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের যোগ না দেওয়ার কারণ হিসেবে প্রকাশ কারাত বলেন, ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য গতকাল (রোববার) আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন এই  বৈঠকে তিনি আসতে পারবেন না। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির জন্যই তিনি আসেননি। ’

দলের পরাজয়ের ব্যাপারে আবদুর রেজ্জাক মোল্লার মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকাশ কারাত বলেন, ‘পার্টির ভেতরে কোনো বিষয়ে মতামত দেওয়া ভালো। সমস্ত মতই শোনা হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৪ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।