চট্টগ্রাম: থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে শুরু হয়েছে রবি-দৃষ্টি ডিবেট চ্যাম্পিয়নশীপ ২০২২। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চট্টগ্রামের সাংগঠনিক বিতর্ক আয়োজনের ৩০ বছর পূর্ণ হতে চলেছে।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) ৩০টি স্কুলের সহস্রাধিক বিতার্কিক, শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পরিচিত ব্যক্তিত্বের কোলাহলে মুখর হয় টিআইসি অঙ্গন। চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উদ্বোধন স্মারক পাঠ করার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয় এবারের আসরের। এরপর চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও ভিন্ন ধারার সাংস্কৃতিক আয়োজন, আঞ্চলিক গানের সঙ্গে অপূর্ব নৃত্য ও অসাধারণ গানে বিমোহিত হন আগত দর্শক ও শিক্ষার্থীরা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সাবেক বিতার্কিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ডা. আবদুন নূর তুষার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের নির্বাহী প্রযোজক ইলন শফির, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত কালাস্টার পরিচালক আশরাফুল কবির রিয়াদ।
দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুলের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন দৃষ্টির চট্টগ্রামের সভাপতি সাইফ চৌধুরী। বক্তব্য দেন দৃষ্টি চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি কসশাফুল হক শেহজাদ, সহ সভাপতি বনকুসুম বড়ুয়া নূপুর, মুজিবুর রহমান মনি ও সাবের শাহ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মুন্না, যুগ্ম সম্পাদক কাজী আরফাত, রিদোয়ান আলম আদনান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্না মজুমদার। উদ্বোধনের পরপরই দৃষ্টি চট্টগ্রামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নানকে অভিনন্দন জানিয়ে ক্রেস্ট ও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিতার্কিক ডা. আবদুন নুর তুষার।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আগামী প্রজন্মের পথপ্রদর্শক হবে আজকের বিতার্কিকরাই, এরা সবাই যুক্তিবাদী এবং যুক্তির তীক্ষ্ণতাই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এই যে সৃজনশীলতার চর্চা ও যুক্তিবোধের আন্দোলন এসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে চলেছি। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় ইচ্ছা ও প্রত্যয় ছিল একটি উন্নততর দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। আমাদের সেই লক্ষ্য পৌঁছানোর জন্য এতসব আয়োজন। আর সেই আয়োজনে যারা সামনের পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় সেই সব অগ্রপথিকদের মধ্যে দৃষ্টি চট্টগ্রাম অন্যতম। প্রত্যেক মানুষেরই মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে সেই প্রতিভার উন্মেষ ও বিকাশ সাধনের জন্য আমাদের নিজেদের মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে হবে, মূলধারা সৃজনশীলতার সঙ্গে থাকতে হবে এবং এভাবেই নির্মিত হবে আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ এবং স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
ডা. আবদুন নুর তুষার বলেন, দৃষ্টির অনুষ্ঠানে আসলে আমার স্মৃতির পট উন্মোচিত হয়। আমার কাছে মনে হয় গতকালই তো ছিল সব, কিন্তু এখানে আসলে মনে হয় অনেকদিন হয়ে গেছে প্রায় ৩০ বছর হয়ে গেছে আমাদের বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের। এই মূলধারার বিতর্ক ও সৃজনশীলতার চর্চায় চট্টগ্রামসহ পুরো বাংলাদেশের দৃষ্টি একটি অন্যতম নাম।
তিনি বলেন, এ পৃথিবীতে যা কিছু ফলে তা ফলায় মানুষ ,যদি আমরা সোনার মানুষ গড়তে পারি, তাহলেই নির্মিত হবে সোনার বাংলা। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, মানুষ তো অবিরাম ছুটে চলছে, আমরা এগিয়ে যাই অগ্রযাত্রার পথ ধরে, আমাদের পথ পার হয়ে তোমাদের এগিয়ে যেতে হবে আরো দূর, আলোর পথ ধরে তোমরা খুঁজে চলবে আমাদের সোনার বাংলা।
রবির আশরাফুল কবির রিয়াদ বলেন, যে গান গাইতে জানে সে খারাপ মানুষ হতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি এই স্বপ্নবাজ তরুণেরা নিজেদের প্রতিভায় বিকশিত হওয়ার মাধ্যমে এ দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় তোমাদের সঙ্গেই থাকবে, তোমাদের অগ্রযাত্রা দেখে আমরা উল্লাসিত হবে, উদ্ভাসিত হবো।
মাসুদ বকুল বলেন, এই প্রজন্মের শিক্ষার্থী অনেক বেশি মেধাবী, দক্ষ, যুক্তি নির্ভর। যদি আমরা চট্টগ্রামকে নিয়ে কিছু করি সেটা হবে বাংলাদেশের অর্জন।
সাইফ চৌধুরী বলেন, দৃষ্টি চট্টগ্রাম ৩০ বছর ধরে স্বপ্ন দেখেছে এবং স্বপ্নের ফেরিওয়ালার মতো সবার কাছে সৃজনশীলতা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার বাণী পৌঁছে দিচ্ছে। কারণ দৃষ্টি শিক্ষা প্রগতি ও যুক্তিতে বিশ্বাস করে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২২
এআর/টিসি
