ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ক্যাম্পাসে ফিরতে চান চবির চারুকলা শিক্ষার্থীরা

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২২
ক্যাম্পাসে ফিরতে চান চবির চারুকলা শিক্ষার্থীরা ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: আবাসিক হল নির্মাণসহ ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকাল ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা৷ তবে জানা গেছে এ আন্দোলনের নেপথ্যে রয়েছে একটি ভিন্ন দাবি। মূলত ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ফিরতে চান ক্যাম্পাসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট অবস্থিত চট্টগ্রাম নগরের মেহেদিবাগে। অপরদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারী উপজেলার জোবরা গ্রামে।

যার ফলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ভোগান্তিও কম নয়। এ ছাড়া চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল না থাকায় ক্যাম্পাসে কিংবা বাইরে থাকতে হয়। তাই শিক্ষার্থীরা চান চারুকলা ইনস্টিটিউটকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হোক।  

গত বুধবার (০২ নভেম্বর) থেকে ২২ দফা দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করলেও ক্যাম্পাসে ফিরতে চাওয়ার দাবিটি ২২ দফার কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন- দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে হবে। চারুকলার মূল ভবনে যদি এসব বাস্তবায়ন সম্ভব না হয়, তাহলে প্রয়োজনে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসতে হবে আমাদের।

এ ছাড়া চারুকলা ইনস্টিটিউটের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারাও একই কথা বলেন। তবে ক্যাম্পাসে ফিরতে চাওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কেউই সরাসরি কথা বলছেন না।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, এখানে থাকার ব্যবস্থা নেই। ক্লাসরুমগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া নানান সমস্যায় জর্জরিত ইনস্টিটিউট। এখানে হয়তো শিক্ষকদের যাতায়াতে সুবিধা আছে। কারণ শিক্ষকরা বেশিরভাগই শহরে থাকেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। যদিও এ বিষয়ে শিক্ষকদের ভয়ে শিক্ষার্থীরা কথা বলতে চান না। তবে আমরা চাই ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে।

চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেক দাবি রয়েছে। আমি সময় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে শাটলের পাশাপাশি বাস সার্ভিস দেওয়ার কথাও বলেছিলাম। কিন্তু তারা এতে রাজি হয়নি। তাই আমরা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এবং খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি, শিক্ষার্থীরা মূলত শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফিরতে চান। আমরা এর বিপক্ষে না। তবে সবকিছু নিয়মানুযায়ী হবে। তাই ইনিস্টিটিউটকে ক্যাম্পাসে আনতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পর্ষদগুলোর অনুমোদন লাগবে। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই আমরা প্রাথমিকভাবে তাদের যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) দিনভর ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। তবে বেশকিছু দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা। ফলে আগামী রোববারেও চলবে অনির্দিষ্টকালের এ কর্মসূচি।

দাবিগুলো হলো- 
শিক্ষার্থীদের নিজস্ব বাস চালু, ডাইনিং ও ক্যান্টিন তৈরি, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, বেসিনের ব্যবস্থা রাখা, পর্যাপ্ত ওয়াশরুম নির্মাণ, আর্ট ম্যাটারিয়ালসের ব্যবস্থা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পাঠাগার সংস্কার, জেনারেটরের ব্যবস্থা, মেডিক্যাল ব্যাকআপ, খেলাধুলার পর্যাপ্ত ইনসট্রুমেন্টের ব্যবস্থা, মেয়েদের আবাসিক হলের ব্যবস্থা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নির্মূল, প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে বৈদ্যুতিক সংকট নিরসন, ছাত্র ও ছাত্রী মিলনায়তনের ব্যবস্থা, সেমিনারের পরিধি বাড়ানো, ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা, অজুখানা ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা, সন্ধার পর পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য লকারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং ছাত্রদের হলের ব্যবস্থা করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২২
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।