ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মুস্তাফিজুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
মুস্তাফিজুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত ...

চট্টগ্রাম: শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় পালিত হলো সন্দ্বীপের সাবেক সংসদ সদস্য মুস্তাফিজুর রহমানের ২১তম মৃত্যুবাষির্কী।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআনখানি ও এতিমখানায় খাবার বিতরণ করা হয়।

১৯৪৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়ো গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৌলভী হাবিবুর রহমান ও মা বিবি আমেনার একমাত্র পুত্রসন্তান তিনি।

শিক্ষা জীবনে প্রাথমিক স্তরে সরকারি বৃত্তি লাভের মধ্য দিয়ে শুরুতেই তিনি মেধার স্বাক্ষর রাখেন। মুছাপুর বদিউজ্জামান উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষাজীবন সমাপনের পর একটি দিনও থেমে থাকেননি। জীবিকার সন্ধানে খুঁজে নেন প্রথম কর্মস্থল বহুজাতিক কোম্পানি জেমস ফিনলে, চট্টগ্রাম। পেশাগত জীবনে অধ্যবসায়, সংযম, পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয়ে নিজেকে অনাগত ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলেন। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৫ সালে ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।

মুস্তাফিজুর রহমান ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে চট্টগ্রাম-৩ আসনের (সন্দ্বীপ) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে তিনি ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকসহ বহু আর্থিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেছেন। তার সম্পাদিত পত্রিকাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- দৈনিক রুপালী, সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ, সাপ্তাহিক স্বদেশ খবর, সাপ্তাহিক প্রিয় খেলা, মাসিক গোলাপী, মাসিক ব্যাংকার ও দ্য উইকলি বাংলাদেশ নিউজ। তিনি আবাহনী ক্লাবের সহ-সভাপতি, ধানমন্ডি ক্লাবের সহ-সভাপতি ও মেরিনার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘদিন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত সন্দ্বীপ সমিতি, ঢাকার সভাপতি ছিলেন তিনি। শিক্ষাদীক্ষা, আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে অনগ্রসর জনপদ সন্দ্বীপে স্ব-উদ্যোগে নিজ নামে ১১টির অধিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। চারদিকে সাগরবেষ্টিত এ দ্বীপের উন্নয়নে তার নিরলস প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতা, সর্বোপরি সন্দ্বীপবাসীর প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসার বিনিময়ে দ্বীপের জনগণ তাকে ‘দ্বীপবন্ধু’ খেতাবে অভিষিক্ত করেন। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী মুস্তাফিজুর রহমান জীবদ্দশায় শ্রেষ্ঠ ব্যাংকার, বিমাবিদ, সফল সংগঠক, আলোকিত মানুষ হিসাবে কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ অসংখ্য সম্মাননা ও পদকে পুরস্কৃত হয়েছেন। দ্বীপ বন্ধু নামে খ্যাত মুস্তাফিজুর রহমান ২০ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। । বর্তমানেও তিনি মরণোত্তর সম্মাননা পদকে ভূষিত হচ্ছেন। এর সর্বশেষ স্বীকৃতি ২০২২ সালে জাতীয় বিমা দিবসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ‘শ্রেষ্ঠ বিমা ব্যক্তিত্ব’ হিসাবে মরণোত্তর পদকপ্রাপ্তি।

তার বড় ছেলে মাহফুজুর রহমান মিতা একই আসনের বর্তমান সরকার দলীয় সংসদ সদস্য।

তার ছেলে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা জানান, আমার বাবা সাবেক এমপি মুস্তাফিজুর রহমানের কারণে সন্দ্বীপ এখন গোটা বিশ্বে একটি সুপরিচিত দ্বীপ। সন্দ্বীপের আনাচ-কানাচ দ্বীপবন্ধুর উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে আছে।  স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও মন্দিরসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে অবদান রয়েছে ।  

সাবেক এমপি মুস্তাফিজুর রহমানের ছেলে বাউরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলাউদ্দিন বেদন, সাধারণ সম্পাদক মাঈনদ্দীন মিশন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাস্টার আবুল হোসেন, মাস্টার শহীদুল্লাহ্ ও পৌর মেয়র মোক্তাদের মাওলা সেলিম, মগধারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম আনোয়ার হোসেন, নবনির্বাচিত জেলা পরিষদের সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা মো. তাওফিকুল ইসলাম অনিক ও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।