ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দখল-উচ্ছেদের খেলা চলছে রেলওয়েতে

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২২
দখল-উচ্ছেদের খেলা চলছে রেলওয়েতে ...

চট্টগ্রাম: গত এক বছরে রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি বিভাগের অভিযানে অবৈধ দখলে থাকা ১০ একর জমি উদ্ধার হয়েছে। এছাড়াও বিতাড়িত করা হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার দখলদারকে।

গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দেড় হাজার অবৈধ স্থাপনা। কিন্তু একদিকে উচ্ছেদ করে এলে অন্যদিকে দখল হয়ে যাচ্ছে রেলওয়ের এসব জায়গা।
 

রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ এসব জমি উদ্ধার করে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগকে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনুলিপি প্রেরণ করে। এছাড়াও উদ্ধারকৃত জায়গা যাতে পুনরায় দখল হয়ে না যায় সেজন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডেন্টকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু কে শুনে কার কথা।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ দখল হওয়া জমিগুলো উদ্ধার করে প্রকৌশল বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু তারা যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করতে ব্যর্থ হন। যার কারণে জায়গাগুলো পুনরায় দখল হয়ে যায়। শুধু অভিযান পরিচালনা করে সময় শ্রম ও অর্থ ব্যয় করলে হবে না, তার যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। ভূমি উদ্ধার করে রেলওয়ের নীতি অনুযায়ী সেখানে গাছ বা কাটা তারের বেড়া দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। তা না হলে দখল-বেদখলের খেলা চলবেই।  

জানা গেছে, অবৈধ দখল হওয়া জায়গাগুলো উচ্ছেদ করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা প্রকৌশল দফতরকে জায়গাগুলো বুঝিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তারা লিখেন, উচ্ছেদকৃত স্থানে বহিরাগত লোক কর্তৃক যেন পুনঃদখল করতে না পারে সেজন্য দৃশ্যমান স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাইনবোর্ড লাগানো এবং উচ্ছেদকৃত ও অবৈধ দখলমুক্ত উক্ত ভূমিতে তার কাঁটা বেড়া/ওয়াল নির্মাণ/বৃক্ষরোপণ ইত্যাদির মাধ্যমে যথাযথভাবে সংরক্ষণ প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের সমন্বয়ে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো। এর পরেও প্রকৌশল দফতরের বেখেয়ালি মনোভাবের কারণে পুনরায় দখল হয়ে যায় উদ্ধারকৃত জায়গাগুলো। এছাড়াও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ কে উচ্ছেদকৃত স্থান সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়। অনুরোধ করা হয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডেন্টকে।  

চিঠিতে বলা হয়, উচ্ছেদকৃত স্থান বহিরাগত লোক যেন পুনরায় দখল করতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা সার্বক্ষণিক পেট্রোল ডিউটি প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মার্চে পাহাড়তলী স্টেশনের দক্ষিণ অংশ, গোয়ালপাড়া তুলাতলী রোড সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৪০৩টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও ৩ হাজার ৬৫১ জন অবৈধ বসবাসকারীকে বিতাড়িত করে ৩ দশমিক ৩৩৮ একর জায়গা উদ্ধার করে রেলওয়ে। এরপর মাস যেতে না যেতেই সে জায়গা পুনরায় দখল হতে শুরু করে। এর আগেও কয়েকবার এসব জায়গা উদ্ধার করে রেলওয়ে। কিন্তু একদিকে উচ্ছেদ করলে অন্যদিকে দখল হয়ে যায়।  

এছাড়াও রেলওয়ের চট্টগ্রাম পে-অ্যান্ড ক্যাশ , রেলওয়ে ম্যান্স স্টোর, চাঁদপুর বড় রেলস্টেশন সংলগ্ন ৩ নম্বর কয়লাঘাট এলাকা, চট্টগ্রাম ঝাউতলা-ষোলশহর এলাকায় কয়েক দফা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। পরে সে জায়গাগুলো পুনরায় দখল হয়ে যায়।  

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ের জায়গা বিভিন্ন মহল অবৈধভাবে দখল করে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে। রেলওয়ে এসব অবৈধ দখলদারদের বিতাড়িত করতে বদ্ধপরিকর। রেলওয়ের বেহাত হওয়া এসব জায়গা উদ্ধারে আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, জায়গাগুলো উদ্ধার করে আমরা রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগকে যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য অনুরোধ জানাই। এছাড়াও নিরাপত্তার জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকেও অবহিত করি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২২ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad