ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবি প্রকৌশল দফতরের উদাসীনতা

৪'শ টাকা বাঁচাতে গিয়ে মাসে অপচয় সাড়ে ৩ লাখ লিটার পানি

মোহাম্মদ আজহার, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
৪'শ টাকা বাঁচাতে গিয়ে মাসে অপচয় সাড়ে ৩ লাখ লিটার পানি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: বিশুদ্ধ পানিভর্তি ট্যাংকি থেকে প্রতি মিনিটে গড়ে সাড়ে ৮ লিটারের বেশি পানি গড়িয়ে পড়ছে মাটিতে। ঘণ্টায় এ পানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৫১০ লিটার।

সেই হিসেবে প্রতিদিন গড়ে পানি অপচয় হচ্ছে ১২ হাজার ২৪০ লিটার।  

অপচয় হওয়া এ পানির পুরোটাই খাওয়ার উপযুক্ত করে বিশুদ্ধ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পাম্পিং সিস্টেমের মাধ্যমে।

অথচ মাত্র কয়েকশো টাকা খরচ করে ট্যাংকিতে ফ্লোট সুইচ বা ভাসমান সুইচ স্থাপনের মাধ্যমে এ পানি অপচয় বন্ধ করা সম্ভব। যার মূল্য মাত্র ৩০০-৪০০ টাকা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সোহরাওয়ার্দী হল ক্যাফেটেরিয়ার পেছনের একটি পানিভর্তি ট্যাংকি থেকে অনবরত গড়িয়ে পড়তে দেখা যায় বিশুদ্ধ খাবারের পানি। সরেজমিনে ক্যাফেটেরিয়ার কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ ট্যাংকির পানি মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো পুলিশ ফাঁড়িতে যায়। সেই পুলিশ ফাঁড়িতে বর্তমানে থাকেন শুধুমাত্র দুইজন মানুষ। বাকি পুলিশ সদস্যরা থাকেন নতুন পুলিশ ফাঁড়িতে। অর্থাৎ দুইজনের খাবারের পানির জন্য প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নষ্ট হচ্ছে ১২ হাজার ২৪০ লিটার পানি।

সোহরাওয়ার্দী হল ক্যাফেটেরিয়ার এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ট্যাংকিতে খুব অল্প খরচে একটি ফ্লোট সুইচ লাগালেই ট্যাংকি পানিভর্তি হলে অটোমেটিক লাইন থেকে পানি আসা বন্ধ হয়ে যায়। অথচ লাইনের কাজ করার সময় তাদেরকে বিষয়টি বারবার বলার পরও বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি তারা। গত ১০-১৫ দিন ধরে এভাবেই অনবরত পানি পড়ছে এ ট্যাংকি থেকে। আগেও এমন পড়তো। তবে মাঝখানে পানির সবধরনের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন আগে আবার পানির সংযোগ দেওয়া হয় পুলিশ ফাঁড়িতে থাকা দুইজনের জন্য। এরপর থেকেই অনবরত এভাবে পানি নষ্ট হচ্ছে।

কি পরিমাণ পানি নষ্ট হচ্ছে তা পরিমাপের চেষ্টা করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, নির্গত হওয়া পানি দিয়ে এক লিটারের একটি পানির বোতল ভর্তি করতে সময় লেগেছে আনুমানিক সাত সেকেন্ড। সেই হিসেবে প্রতি মিনিটে নষ্ট হচ্ছে সাড়ে ৮ লিটার পানি। যা গড়ে মাস শেষে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ লিটার।  

শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ ট্যাংকি থেকে এভাবে অনবরত পানি পড়তে দেখেন তারা। তবে তারা মাঝেমধ্যে বিষয়টি জানাতেন সোহরাওয়ার্দী হলের ক্যাফেরিয়ার কর্মচারীদের। যদিও ট্যাংকিটি মূলত পুলিশ ফাঁড়ির খাবারের পানির জন্য স্থাপন করা। তাই ক্যাফেটেরিয়ার কর্মচারীরা এর কোনও সুরাহা করতে পারতেন না। ফলে দীর্ঘদিন এভাবেই নষ্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটি কোটি লিটার বিশুদ্ধ খাবারের পানি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিউদ্দিন সুমনের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি কোনো উত্তর না নিয়ে উল্টো বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু বিষয়টি জেনেছি আমি প্রকৌশল দফতরকে জানাবো।  

প্রকৌশল দফতরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজলকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি প্রতিবেদককে ধন্যবাদ জানান এবং খোঁজ নিয়ে এ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
এমএ/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।