ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দুর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত সিএমপি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২
দুর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত সিএমপি দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত সমন্বয় সভা

চট্টগ্রাম: দুর্গাপূজা চলাকালীন ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য।  

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সের মাল্টিপারপাস শেডে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত সমন্বয় সভায় তিনি এ দাবি জানান।

 

এই দাবির ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।  

সিএমপির পরামর্শ 

পূজামণ্ডপগুলোতে পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক আসা-যাওয়ার পথ রাখা।

করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় মণ্ডপের প্রবেশমুখে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা। মণ্ডপের চারদিকে বা উপরের অংশ উন্মুক্ত রাখা।

মণ্ডপের ভেতরে একসঙ্গে ২০ জনের বেশি লোক অবস্থান না করা। মণ্ডপের প্রবেশমুখে ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মণ্ডপসহ আশপাশের এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ করা। জরুরি সেবাদানকারীদের ফোন ও মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ করা এবং তা মণ্ডপের দৃশ্যমান স্থানে টাঙানো। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জেনারেটর প্রস্তুত রাখা। বিদ্যুতের ক্রটিপূর্ণ সংযোগ দ্রুত মেরামত করা। সার্বক্ষণিক একজন ইলেকট্রিশিয়ান নিয়োগ করা। পূজামণ্ডপে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে ইত্যাদি স্থাপন করা। অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা রাখা। যেমন ফায়ার এক্সটিংগুইসার, পানি, বালু ইত্যাদি মজুদ রাখা। মন্দির বা পূজামণ্ডপে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে অনুষ্ঠান বা কার্যক্রম পরিচালনা করা। অহেতুক কোনো প্রকার থিম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা ডিজে পার্টি না করা। পূজা কমিটি বা পূজামণ্ডপ নিয়ে কোন দ্বন্দ্ব থাকলে নিজেরা অথবা মহানগর পূজা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত মীমাংসা করা। আগত দর্শনার্থীদের অজ্ঞানপার্টি ও মলমপার্টি থেকে সতর্ক করা। নামাজ ও আজানের সময় সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখা। প্রতিমা পরিবহনে সহায়তার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসির সঙ্গে সমন্বয় করা।  

পূজামণ্ডপে নারী দর্শনার্থীরা যাতে ইভটিজিং বা কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত করা। পূজামণ্ডপের ব্যবস্থাপনা কমিটি মণ্ডপসমূহে সার্বক্ষণিক নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করবেন। স্বেচ্ছাসেবকদের চেনার সুবিধার্থে গেঞ্জি, ক্যাপ, আর্মডব্যান্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। স্বেচ্ছাসেবকদের নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট থানার ওসির কাছে পাঠাতে হবে।  

যেকোন ধরনের ঘটনার সংবাদ দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করতে হবে। মদ ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
পূজামণ্ডপের আশপাশে মেলা ও জুয়ার আসর বসানো যাবে না। আতশবাজি, পটকা ফোটানো যাবে না।
যেকোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বা গুজবের বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করতে হবে।  আগামী ৫ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করতে হবে।

লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, গতবছর পূজার সময় কুমিল্লাসহ সারাদেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা সরকার ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য। আমাদের সম্প্রীতিকে নষ্ট করার জন্য। এরকম কাজ যারা করে তারা সংখ্যায় কিন্তু কম। কোনো পূজামণ্ডপে ডিজে অনুষ্ঠান হবে না। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো কিছু কিছু মণ্ডপে স্থায়ীভাবে পুলিশ দেওয়ার জন্য।  

তিনি বলেন, পূজা উদযাপন পরিষদ সবসময় সতর্ক অবস্থায় আছে। আপনাদের মাধ্যমে অনুরোধ করবো মোবাইলের ইন্টারনেটের গতিকে পূজা চলার চার-পাঁচ দিন স্লো করার জন্য। কারণ ফেসবুকে উল্টা পাল্টে লিখে অপ্রপচার চালানো হয়। ইন্টারনেট স্লো করলে গুজব থেকে বাংলাদেশ বাঁচবে। কারণ একটি গোষ্ঠী আছে উৎসবকে কেন্দ্র করে এই রকম কাজ করে। সামনে নির্বাচন,  একটি গোষ্ঠী সবসময় চাইবে সরকারের ধারাবাহিকতায় ব্যাঘাত করার জন্য, প্রশাসনের সফলতা ব্যাহত করার চেষ্টা করবে তারা। তবে আমরা সচেতন আছি। যাতে পূজা ভালোভাবে করতে পারি।

অনুষ্ঠানে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন,  শারদীয় দুর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। আর পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট গতির স্লো করার বিষয়ে যে দাবি করা হয়েছে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। নিরাপত্তার জন্য সাদা পোশাকে পুলিশ নিয়োগের পাশাপাশি চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং করা হবে।  

এ সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এমএ মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, দুর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের নেতা ও সরকারি অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।