ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মুক্তি পাচ্ছে এক যুবকের সাজা খাটা অন্য যুবক!

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২২
মুক্তি পাচ্ছে এক যুবকের সাজা খাটা অন্য যুবক! ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম: নগরের পাহাড়তলী থানার মাদক মামলায় আদালত ৫ বছরের কারাদণ্ড, ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন জাসেদুল হককে। তিনি কক্সবাজার জেলার রামু থানার রাজাকুল সিকদার পাড়ার ওবায়দুল হকের ছেলে।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজারকুল বাজার সিকদার পাড়া স্টেশনের ইত্যাদি স্টোর থেকে রামু থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। নামের মিল থাকার কারণে জাসেদুল হককে গ্রেফতার করা হয়।

জাসেদুল হক প্রকৃত আসামির বদলে কক্সবাজার কারাগারে রয়েছেন। নামের মিল থাকার কারণে প্রকৃত আসামির বদলে কোনো কিছুর মিল থাকায় একজনের স্থলে আরেকজন জেল খাটার বিষয়টি গত ২৮ জুন কক্সবাজার কারাগারের জেল সুপার মো. নেছার আলমকে জাসেদুল হক জানান। গত ৩০ জুন কক্সবাজার কারাগারে জেল সুপার মো. নেছার আলম আদালতের নজরে আনেন। গত ৩ জুলাই অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালতে পিডব্লিউ মূলে জাসেদুল হককে আদালতে হাজির করা হয়।

ওইদিন আদালত জেলখানার ছবি সম্বলিত রেজিস্টার খাতাসহ সব নথি পর্যালোচনা করে দেখেন বর্তমানে কারাগারে থাকা জামসেদুল হক প্রকৃত আসামি নন। জাসেদুল হক প্রকৃত আসামি হিসেবে হাইকোর্টে আপিল করেন। আপিলে ৬ মাসের জামিন আদেশপ্রাপ্ত হন। পরবর্তী জাসেদুল হক কক্সবাজার কারাগারে মাধ্যমে প্রকৃত আসামি নন মর্মে আদালতকে জানান। আদালত তার আবেদন এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে মামলাটি হাইকোর্টে আপিল দায়ের থাকা আসামির মুক্তির বিষয়ে উচ্চ আদালতে নির্দেশনার কাগজপত্র হাইকোর্টে পাঠান।

আদালত সূত্রে জানা যায়, পাহাড়তলী থানার মামলা নম্বর ০৪(০৩)১১ ও জি আর-১৮২/১১। মামলার দায়রা নম্বর ১৭৩৭/১১। নগরের পাহাড়তলী থানার পশ্চিম নাসিরাবাদ হালিশহর রোডের সামনে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ জাসেদুল হককে গ্রেফতার করা হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালতে মাদকের মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড, ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন জাসেদুল হককে। সাজার পরোয়ানামূলে গত ২২ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার কারাগারে যান। গত ২৮ জুন কক্সাবাজারের কারাগারের জেল সুপার মো. নেছার আলম তাকে কোনো মামলার আসামি নন বলে জানান। গ্রেফতারকৃত প্রকৃত আসামি জাসেদুল হকের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। তখন বর্তমান কারাগারে থাকা জাসেদুল হক মালেশিয়াতে ছিলেন।

কক্সবাজার কারাগার সূত্রে জানা যায়, কারাগারের সংরক্ষিত হাজতি রেজিস্টার পর্যালোচনা করে দেখা যায় সূত্রস্থ মামলা সংক্রান্ত হাজতি নম্বর ২১২৪/এ। গত ২২ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার রামুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন হাজতের পরোয়ানামূলে কারাগারে আসেন। প্রকৃত আসামি ২০১১ সালের ২ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। তিনি ২ মাস ১ দিন কারাভোগের পর চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে ২০১১ সালের ৩ মে জামিন নেন। ২০১২ সালের ১৭ জানুয়ারি থেকে পলাতক ছিলেন।

আদালতের পেশকার ওমর ফুয়াদ বাংলানিউজকে বলেন, জামিন আদেশের মূলে জাসেদুল হককে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মুক্তির আদেশের কপি বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে আমাদের আদালতে আসে। আমাদের যাবতীয় কার্যক্রম শেষে দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আপিল শুনানিতে বিস্তারিত উঠে আসবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭  ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।