ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনা হাওয়া ভবন থেকে: নাছির 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২২
গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনা হাওয়া ভবন থেকে: নাছির  বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, হাওয়া ভবনে বেগম জিয়ার ছেলে, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং জোট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে গ্রেনেড হামলায় প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল, এমনকি ওই হাওয়া ভবন থেকে গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাটি সরাসরি মনিটরিং করা হচ্ছিল।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সেদিন প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার জন্য ঢাকার আদালত পাড়ায় ভবঘুরে ও ছিঁচকে অপরাধী জজ মিয়াকে ম্যানেজ করে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং আষাঢ়ে গল্প সাজানো হয়।

এই ঘটনাটি এতই অবিশ্বাস্য যে, তা কারো বুঝতে একটুও অসুবিধা হয়নি। একই সময়ে শৈবাল সাহা পার্থ নামক এক তরুণকেও গ্রেনেড হামলায় জড়িত করে গ্রেফতার দেখানো হয়।
 

রোববার (২১ আগস্ট) বিকেলে পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গ্রেনেড হামলার মূল হোতা ও সহযোগীদের আদালতের রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে জনসমাবেশে তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা ছিল- এই বিষয়ে কোনো বিতর্ক অর্থহীন জানিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে আজ পর্যন্ত ২৪ বার হত্যার অপচেষ্টা হয়েছে। আমাদের সৌভাগ্য যে, তাদের কোনো অপচেষ্টা সফল হয়নি, তবে আশঙ্কা এখনো দূর হয়নি। তারা নানাভাবে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। আজকের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতিতে তারা ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে চায় এবং নানাভাবে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে বিভ্রান্ত করে ক্ষেপিয়ে তুলতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা ১৩ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশকে অনেক কঠিন অবস্থা মোকাবিলা করে বর্তমানে যে পর্যায়ে উন্নীত করেছেন তা সারা বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।  

তিনি বলেন, করোনাকালের পর অর্থনীতির চাকা সচল রেখে তিনি অনেক অসাধ্য সাধন করার পর যখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করেছেন তখনও বিএনপির সহ্য হয়নি। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই বৈশ্বিক পরিস্থিতি অবনতিশীল হলেও ইউরোপ-আমেরিকায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ৫ মাস পর বাধ্য হয়ে দেশে মূল্য বাড়াতে হয়। এজন্য সাময়িক সংকট সৃষ্টি হয়েছে এটা বাস্তবতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন যে, মানুষ কষ্টে আছে এই কষ্ট থেকে মানুষকে উদ্ধার করার জন্য তিনি নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডির অসম্পূর্ণ মিশন সমাপ্ত করতেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের অপচেষ্টায় পরিকল্পিতভাবে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই দিন আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইভি রহমান সহ ২৪জন নেতাকর্মীর প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়। শেখ হাসিনাসহ অন্তত তিন শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন এবং অনেকেই চিরদিনের জন্যই পঙ্গুত্ব বরণ করেন। তাই ২১ আগস্টের এই গ্রেনেড হামলার পেছনে যে অসৎ উদ্দেশ্যটি ছিল তা হলো- বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা। তাদের এই অসৎ উদ্দেশ্য পূর্ণ না হওয়ায় তারা অতৃপ্ত। এজন্য তাদের মুখ থেকে ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি ঘটানোর প্রকাশ্যেই সংকেত দেওয়া হয়।  

সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য চন্দন ধর, মোহাম্মদ হোসেন, জহুর আহমেদ, আব্দুল আহাদ, মো. আবু তাহের, মো. শহিদুল আলম, নির্বাহী সদস্য মো. মোরশেদ আক্তার চৌধুরী।

সভার শুরুতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।