চট্টগ্রাম: জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের বসার আসনের সামনেই বড় মনিটর। দাপ্তরিক কাজ সারতে সারতে সেদিকে চোখ রাখছিলেন তিনি।
দুর্নীতিমুক্ত ভূমিসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা ভূমি অফিস, উপজেলা পরিষদ, ভূমি অফিস সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সেখানে অডিওসহ রেকর্ড করা হয়। ঘুষ, দালাল, দুর্নীতিমুক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আওতাধীন সকল অফিসকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নেজারত শাখা, আইসিটি শাখা, পেনশন ও কল্যাণ শাখা, আগ্নেয়াস্ত্র শাখা, প্রবাসী কল্যাণ শাখা, এস এ শাখা, ফরমস ও স্টেশনারি শাখা, গোপনীয় শাখা, ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখা, জে এম শাখা শাখা, ভিপি শাখা, জেনারেল সার্টিফিকেট শাখা, জেলা ই-সেবা কেন্দ্র, ট্রেজারী শাখা, তথ্য ও অভিযোগ শাখা, ভূমি অধিগ্রহণ (১), ভূমি অধিগ্রহণ (২) ও ভূমি অধিগ্রহণ (৩) শাখা, রেভিনিউ মুন্সিখানা (আর এম), লাইব্রেরি ও শিক্ষা শাখায় স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। এছাড়াও ভূমি অফিসে যেন দালাল চক্র সক্রিয় হতে না পারে সেজন্য প্রতিটি টেবিলে স্থাপন করা হয়েছে ইন্টারকম টেলিফোন। পাশাপাশি ভূমি অফিসের সামনের ঝাউবাগান পরিষ্কার করে সেখানে সেবাপ্রার্থীদের অপেক্ষার জায়গা করা হয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, একজন সেবাপ্রার্থী হেল্পডেস্কে কথা বলছেন। ওই সেবা প্রার্থী ভূমি অফিসের নাজিরের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে হেল্পডেস্কের দায়িত্বে থাকা মো. মহিউদ্দিন ইন্টারকমে নাজিরের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি সেবাপ্রার্থীর নাম এন্ট্রি করে তাকে নাজিরের রুম দেখিয়ে দেন।
হাটহাজারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু রায়হান বাংলানিউজকে বলেন, এখন আর উপজেলা ভূমি অফিসকে কেউ দুর্নীতির আখড়া বলতে পারবে না। সেবা প্রত্যাশী ছাড়া অন্য কেউ ভূমি অফিসে ঢুকতে পারবে না। ফলে এ অফিসে দালালরা আর সক্রিয় হয়ে উঠতে পারবে না।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের আওতাধীন সকল অফিসসমূহ দুর্নীতিমুক্ত রাখতে অত্যাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ১৯৩ জন দুর্নীতিবাজ ওমেদার ও অস্থায়ী কর্মচারীকে ভূমি অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাদের তালিকা ভূমি অফিসগুলোতে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০৮টি সরকারি অফিস যথাক্রমে ভূমি অফিস, তহশিল অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে ৭১৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার ভূমি অফিস ও নগরের কাট্টলী, চান্দগাঁও, সদর, পতেঙ্গা, আগ্রাবাদ ও বাকলিয়া সার্কেলসহ ৬টি ভূমি অফিস ৯৬টিরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। উপজেলা ও নগরে মোট ২১টি ভূমি অফিসের আওতাধীন ইউনিয়ন ভূমি অফিস রয়েছে ৭৬টি। সেখানেও লাগানো হয়েছে অত্যাধুনিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা।
নগরের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের আওতাধীন সকল অফিস দুর্নীতিমুক্ত রাখতে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় নিয়ে এসেছেন। নগরের প্রতিটি ভূমি অফিসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
বিই/টিসি