ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লাল সালুতে মোড়ানো কৃষকের স্বপ্ন 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
লাল সালুতে মোড়ানো কৃষকের স্বপ্ন  ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: তখনও ভালো করে ফোটেনি ভোরের আলো। আবছা অন্ধকারে লাল সালু হাতে কৃষকের ছুটে চলা বাগিচায়।

উদ্দেশ্য সকাল হওয়ার আগেই পেয়ারা ভর্তি ভার নিয়ে হাজির হতে হবে হাটে। পেয়ারার মৌসুম এলেই প্রায় প্রতিদিনই এমন দৃশ্য চোখে পড়ে পটিয়া ও চন্দনাইশ এলাকায়।
 

পেয়ারা ভর্তি ভার যখন ন্যায্যদামে বিক্রি হয়, তখনই কৃষকের পরিশ্রম পূর্ণতা পায় হাসিতে। পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষ হওয়া এসব পেয়ারা খেতে সুস্বাদু হওয়ায় সুনাম রয়েছে আলাদা। অনেকেই পেয়ারা চাষ করে বদলেছেন নিজের ভাগ্য, হয়েছেন স্বাবলম্বী।  

চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, হাসিমপুর ও জামিজুরী ইউনিয়নের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ পেয়ারা চাষের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা, শ্রীনগর এলাকা ও পটিয়ার খরনা, কচুয়াই, উত্তর শ্রীমাই, হাইদগাঁও, কেলিশহর এলাকায় পেয়ারার চাষ হয়ে থাকে।  

পটিয়ার খরনা এলাকার পেয়ারা চাষী মো. বাবুল বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় পেয়ারার ফলন তেমন ভালো হয়নি। তবে দাম ভালো রয়েছে। এ দাম মৌসুমের শেষ সময় পর্যন্ত থাকলে লাভের মুখ দেখবো।

উত্তর শ্রীমাই এলাকার আরেক পেয়ারা চাষী আহমদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ৭ বিঘা জমিতে পেয়ারা বাগান রয়েছে আমার। বাজারে যে পেয়ারার দাম রয়েছে তাতে পরিচর্যাসহ সব খরচ মিলিয়ে লাভের মুখ দেখবো। পেয়ারার সাইজ ও স্বাদে মিষ্টি হওয়ায় এ পেয়ারার প্রতি আগ্রহ আছে পাইকারী ব্যবসায়ীদের।  

স্থানীয় ভাষায় পেয়ারাকে ‘গয়াম’, ‘গোয়াছি’ বলেন অনেকে। বাংলাদেশের আপেল হিসেবে খ্যাত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সুস্বাদু পেয়ারার একটি উন্নত জাত কাজি পেয়ারা। খেতে মিষ্টি ও দেখতে সুন্দর বলে এই পেয়ারার চাহিদাও বেশ। যা এসব এলাকার পাহাড়ি উর্বর জমিতে প্রচুর উৎপন্ন হচ্ছে।  

পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, পটিয়ায় মোট পেয়ারার আবাদ হয়েছে ৮০ হেক্টর জমিতে। পেয়ারার হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ফলন ২১ মেট্রিক টন। পটিয়া উপজেলায় সর্বমোট উৎপাদন ১৬৮০ মেট্রিক টন। অন্যদিকে চন্দনাইশ উপজেলায় পেয়ার চাষ হয়েছে ৭৫৫ হেক্টর জমিতে। এখানে পেয়ারার হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ফলন ১৫ মেট্রিক টন।

পটিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কল্পনা রহমান ও চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. ইমরান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় এসব এলাকার পেয়ার স্বাদ ভালো। তাই চাহিদাও বেশ। আমরা এ বছর যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছি, তা পূরণ করতে পারবো। পেয়ার চাষ নিয়ে আমাদের কাছে কোনো কৃষক সহযোগীতা চাইলে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।