ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জমির ক্ষতিপূরণ চেয়ে ৪০ বছর ঘুরছেন নুর চেহের বেগম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২২
জমির ক্ষতিপূরণ চেয়ে ৪০ বছর ঘুরছেন নুর চেহের বেগম ...

চট্টগ্রাম: ৮৭ বছরের নুর চেহের বেগমের ৪০ বছরই কেটেছে জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের দুয়ারে দুয়ারে। স্বামীর মৃত্যুর পর রেখে যাওয়া শেষ জমিটুকু বন্দর কর্তৃপক্ষের কব্জায়।

সব মিলিয়ে জীবনটাই যেন হ য ব র ল।

১৯৮০ সালে নূর চেহের বেগমের শেষ সম্বল ৩৬ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

নিজের বৈধ জমি হওয়া স্বত্ত্বেও জেলা প্রশাসনের ভুলে ক্ষতিপূরণের টাকা পায় অন্যরা। এরপর থেকে নিজের ন্যায্য পাওনা বুঝে পেতে দিনের পর দিন ধরনা দেন সরকারি দুই দফতরে।

বুধবার (৩ আগস্ট) দুর্নীতি দমন কমিশন আয়োজিত গণশুনানীতে এমন অভিযোগ নিয়ে আসেন নূর চেহের বেগম। এত বছরেও এমন অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতবাক দুদক কমিশনারও।

গণশুনানিতে নুর চেহের বেগমের ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, গত ৪০ বছর ধরে আমার মা ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য ঘুরছে। অথচ যারা এই ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করেছে, তাদের বন্দর কর্তৃপক্ষ উল্টো ভূমি দিয়ে পুনর্বাসন করেছে। আর আমার মা ক্ষতিপূরণের আশায় জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা জমি পছন্দ করার পর অধিগ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন জেলা প্রশাসন। তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা ভুয়া কাগজ দেখিয়ে অন্যরা আত্মসাৎ করেছে। এ নিয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলাও রয়েছে, যা আদালতে বিচারাধীন।  

তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি জানার পর কিছুই করার ছিল না। আইনগতভাবেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও মানবিক দিক বিবেচনা করে নূর চেহের বেগমের এক সন্তানকে বন্দরে চাকরির ব্যবস্থা করেছি।  

শুনানিতে জেলা প্রশাসনের ভুলের বিষয়টির ব্যাখ্যা দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি (বৃদ্ধা মহিলা) আমার কাছে একাধিকবার এসেছিলেন। আমি তাকে আশ্বাস দিয়েছে কিছু করার। অর্থ আত্মসাৎকারী যে ৬ জন রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন। যেহেতু মামলাটি বিচারাধীন, আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহায্য হিসেবে ৫ লাখ টাকা নুর চেহের বেগমকে দিতে পারি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২২
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।