ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই দু’দিন অচল ক্যাম্পাস

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২২
নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই দু’দিন অচল ক্যাম্পাস

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: আমরা যারা পদ বঞ্চিত হয়েছি, আমরা বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ ছাত্র। অথচ পূর্ণাঙ্গ কমিটির দিকে তাকালে দেখবেন যাদের ছাত্রত্ব নেই, তারাই সর্বোচ্চ পদধারী।

তাদেরকেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং আমাদের নেতারা চিনেন। তারা যদি কমিটিতে আমাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতো, তাহলে আমরা পদবঞ্চিত হতাম না।
তাই আমরা আন্দোলন করেছি।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত মো. দেলোয়ার হোসেন আন্দোলনের বিষয়ে এমন মন্তব্য করেছেন।

অনির্দিষ্টকালের আন্দোলন স্থগিতের কারণ জানতে চাইলে মো. দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিলো কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং আমাদের নেতার (ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল) দৃষ্টি আকর্ষণ করা। ইতোমধ্যে আমাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি তাঁদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাই আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আশাকরি আমাদের দাবিগুলো বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেবেন।

আন্দোলকারী আল আমিন বলেন, বিজয় পরিবারের অভিভাবক শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভাই আমাদের দাবীগুলো সম্পর্কে জেনেছেন। প্রশাসনের অনুরোধ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আন্দোলন প্রত্যাহার করছি। আমাদের একটা প্রতিনিধি দল নওফেল ভাই ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দায়িত্বরতদের সঙ্গে দেখা করবে। উনারা যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা আমরা নির্দিধায় মেনে নিব।

এদিকে আন্দোলন স্থগিত করার পর মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) বেলা ১২টায় খুলে দেওয়া হয়েছে চবির মূল ফটক। এতে সচল হয়েছে যানচলাচল। এর আগে গত রোববার (৩১ জুলাই) রাতে চবি শাখা ছাত্রলীগের ৪২৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর থেকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন পদবঞ্চিতরা। আন্দোলনের কারণে সোমবার (১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় শাটলট্রেন চলাচল এবং অধিকাংশ বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ ছিল। একই দিন বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ৫ দফা দাবি জানিয়ে অনির্দিষ্টকালের আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

২০১৯ সালের ১৫ জুলাই চবি ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে রেজাউল হক রুবেলকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই সদস্যের কমিটি দেওয়ার ৩ বছর ১৬ দিন পর অবশেষে পুর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

জানা গেছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত অধিকাংশই বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ বিজয়ের অনুসারী। বিজয় গ্রুপের একাংশের অভিযোগ সদ্য ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াসের মদদেই তাঁরা পদবঞ্চিত হয়েছেন। এছাড়া আন্দোলনকারীদের পাঁচটি দাবির একটি ছিলো মো. ইলিয়াসকে আজীবন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা। পাশাপাশি আন্দোলনকারীরা মো. ইলিয়াসকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

এদিকে পদবঞ্চিতদের আন্দোলনের বিষয়ে মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) বেলা ১১টায় মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তাঁর ফেইসবুক পেইজে লিখেছেন, সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করা, ভাংচুর করা, অপহরণ করা, অপরাধের হুমকি দেয়া, হত্যার হুমকি দেয়া কোনোভাবেই ছাত্র সংগঠনের আদর্শিক কর্মীর কাজ হতে পারেনা। যারা এসব করছে তাদের বিষয়ে সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অত্যন্ত কঠোর হওয়া প্রয়োজন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২২
এমএ/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।