ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ডলার রেট নিশ্চিতে গভর্নরকে কঠোর মনিটরিংয়ের প্রস্তাব সিসিসিআইর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২২
ডলার রেট নিশ্চিতে গভর্নরকে কঠোর মনিটরিংয়ের প্রস্তাব সিসিসিআইর বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের সঙ্গে চিটাগাং চেম্বার সভাপতি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ ব্যাংকের নবনিযুক্ত গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম মতবিনিময় করেছেন। এ সময় চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।

 
 
রোববার (৩১ জুলাই) সকালে ঢাকার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে মতবিনিময় করেন তাঁরা।

মাহবুবুল আলম নবনিযুক্ত গভর্নরকে অভিনন্দন জানান এবং সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে ডলার মূল্যের অস্থিতিশীলতা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

 

তিনি সিএমএসএমইর জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম এবং প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় সিএমএসএমইর জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা ও বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা করায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তৃতীয় পর্যায়ে সিএমএসএমইর জন্য ঘোষণাকৃত প্রণোদনার এ ঋণ সুবিধা যাতে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান পেতে পারে তার জন্য একক প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী ঋণের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দিতে তিনি প্রস্তাব দেন। একই সঙ্গে ঋণ প্রদানে ব্যাংকগুলোর তথ্য যাচাইয়ের সুবিধা এবং অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা তৈরি করতে এসএমই ফাউন্ডেশন ও জেলা চেম্বারের সমন্বয়ে সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ব্যাংকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এমন আর্থিক বিবরণীর হিসাব রাখার স্ট্যান্ডার্ড ফরমেট তৈরি করা ও সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।  

চলমান ডলার সংকট নিরসনে সব প্রয়োজনীয় আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ডলার রেট ৯৪ দশমিক ৭৫ টাকা ব্যাংক যাতে দেয় তা নিশ্চিত করা, প্রয়োজনে কঠোর মনিটরিং চালু করা, নির্দেশনা অমান্য করলে এডি/ব্যাংকগুলোকে শাস্তি ও বড় অঙ্কের জরিমানার আওতায় আনা, মানি এক্সচেঞ্জগুলোকে কঠোরভাবে মনিটরিং করা এবং ক্রেতাদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচই করা, বিধি বহির্ভূত এবং দলিল প্রমাণ ছাড়া কারো কাছে ডলার পাওয়া গেলে তা বাজেয়াপ্ত করা, ট্যুরিস্ট ভিসায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ডলার নেওয়ার লিমিট কমিয়ে দেওয়া এবং ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের মূল্যের ব্যবধান ১-২ টাকার মধ্যে রাখতে প্রস্তাব দেন।

চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন ডলারের রিজার্ভ বৃদ্ধির আরেকটি সম্ভাব্য উৎস চিহ্নিত করে বলেন, অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী বিদেশে কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিয়ম না বোঝার কারণে আইনগতভাবে উক্ত ব্যবসা থেকে অর্জিত মুনাফার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনতে সক্ষম হচ্ছেন না। তবে করোনা পরিস্থিতিসহ সার্বিক বিবেচনায় সরকারের রাজস্ব ও বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ী মূলধন বাড়ানোর লক্ষ্যে চলতি বাজেটে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের স্থাবর ও অস্থাবর বৈদেশিক সম্পত্তি ট্যাক্স প্রদানপূর্বক প্রদর্শন ও আনয়নের বিশেষ সুযোগ রাখা হয়েছে। একই বিবেচনায়, বিদেশে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসাগুলোরও আইনি অনুমোদন সহকারে প্রদর্শন ও ব্যবসা থেকে অর্জিত মুনাফার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।  

ব্লু ইকোনোমিতে দেশি প্রাইভেট সেক্টরের সক্ষমতা এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য ব্লু ইকোনোমি ঋণ প্যাকেজের আওতায় কম সুদে ঋণ প্রদানের স্কিম চালু করা যেতে পারে বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার চিটাগাং চেম্বারের প্রস্তাবনাগুলো বিবেচনায় নিয়ে চলমান পরিস্থিতিতে সবাইকে ধৈর্যধারণের পাশাপাশি Unrepatriated export proceed আদায়ে চেম্বারের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কামনা করেন। আগামী দুই মাসের মধ্যে ডলার বিনিময় হারের চলমান অস্থিতিশীলতা ভারসাম্যতায় ফিরে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।