ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শিক্ষক হত্যা ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মানববন্ধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২২
শিক্ষক হত্যা ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মানববন্ধন বক্তব্য দেন কবি-অনুবাদক আলম খোরশেদ। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: শিক্ষক হত্যা ও শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে নগরের চেরাগি পাহাড় মোড়ে মানববন্ধন করেছে সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম। মানববন্ধন থেকে সাম্প্রদায়িক বর্বরতার অবসান এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

 

বুধবার (২৯ জুন) বিকেলে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গত ২৭ জুন একজন উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীর আঘাতে সাভারের আশুলিয়ায় কলেজ শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন খ্যাতিমান কবি-সাংবাদিক আবুল মোমেন, কবি-অনুবাদক আলম খোরশেদ, অধ্যক্ষ ড. আনোয়ারা আলম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, কবি কামরুল হাসান বাদল, আবৃত্তি শিল্পী ও সংস্কৃতি সংগঠক রাশেদ হাসান, অধ্যাপিকা শীলা দাশগুপ্ত প্রমুখ।

কবি-সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, একদিকে সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক অবক্ষয় অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক চিত্র দেখতে পাই। সমাজে শিক্ষকদের গুরুত্ব আছে। শিক্ষকের মতামতকে মানুষ গুরুত্ব দিত, দেয়। হিন্দু সম্পত্তি গ্রাস ও ভারতের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য নির্যাতন করা হয়। ৭৫ এরপর মৌলবাদীদের রাজনীতি করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। এরপর সমাজে বড় পরিবর্তন ঘটেছে, সাম্প্রদায়িক চেতনা, ধর্মান্ধতা এগুলো বিস্তার লাভ করেছে। ধর্মভিত্তিক দলগুলো সমাজে জোট তৈরি করছে। আমরা এটাও দেখছি- ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীলদের পাশাপাশি ধর্মান্ধদের নিয়েও সমন্বয় করার চেষ্টা করছে। আমাদের পরিষ্কার করে বলে দিতে হবে- এটি বাংলাদেশ, এটি চলবে না। এ আপস ১৯৭১ সালে হয়নি। আজ হয়তো আমাদের এ আয়োজন ক্ষুদ্র। এ আয়োজন অচিরেই বড় হবে। মানুষের মধ্যে যেমন পুঁজিবাদী চেতনা জেগেছে তেমনি কিশোর সমাজের অবক্ষয়, যাতে অভিভাবকদের মনে বড় রকমের দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করেছে।  

আজ ডাক দেওয়ার সময় এসেছে। সমাজকে মানবিক করতে, গণতান্ত্রিক চেতনাকে জাগিয়ে তুলতে, অসাম্প্রদায়িক মানবিক বোধকে লালন করবার জন্য আজ আমাদের ডাক দিতে হবে। যেসব রাজনৈতিক দল এখনো প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে ক্ষমতার কথা না ভেবে এর জন্য ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছে তাদেরও মাঠে নেমে আসতে হবে। আজ বৃহত্তর নাগরিক ঐক্য দরকার, রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক সংগঠন সবাই মিলে। যে ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একাত্তরের চেতনাকে ফিরিয়ে আনব এবং আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশকে ধর্মান্ধদের হাতে বিনষ্ট হতে দেব না।    

বক্তারা বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে ধর্মান্ধতা থেকে বের করে পরমত সহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তচিন্তা-ধারায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে যাতে তারা আদর্শ জীবন গঠনসহ দেশ ও জাতির উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।