ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আঁরা বেগ্গুনে দেখিলাম পদ্মা সেতু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
আঁরা বেগ্গুনে দেখিলাম পদ্মা সেতু ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: মাওয়া প্রান্তে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করছিলেন, তখন চট্টগ্রামবাসীর চোখ ছিল বড় পর্দায় আর টেলিভিশনে। সবার চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস, যেন নিজেরাই চলে গেছেন পদ্মাপারে।

শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান নগরবাসী সরাসরি উপভোগ করার সুবিধার্থে ৮টি পয়েন্টে বড় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।

সকালে নগরের নিউ মার্কেট মোড়, আগ্রাবাদ মোড়, বহদ্দারহাট মোড়, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, আন্দরকিল্লা মোড়, জামালখান মোড়, পুরোনো রেলস্টেশন ও বড়পুল মোড়ে বড় পর্দায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হয়।

এ সময় তুলে ধরা হয় দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির চিত্র।

জামালখানে সড়কের পাশে ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের উদ্যোগে পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা স্থাপন করা হয়। শেঠ প্রপার্টিজের আর্থিক সহায়তায় ২০ জন কারিগর গর্জন কাঠ ও হার্ডবোর্ডের সমন্বয়ে দৈর্ঘ্যে ১০০ ফুট আর প্রস্থে ২০ ফুট রেপ্লিকা সেতুটি তৈরি করেছে। স্প্যানগুলোতে ৫০টি রঙ-বেরঙের বাতি স্থাপন করা হয়েছে। এ রেপ্লিকায় স্প্যান আছে ৪টি, পিলার ২০টি।  এই রেপ্লিকা দেখতে ভিড় করেন লোকজন। কেউ তুলেছেন ছবি, বড় পর্দায় দেখেন ও শুনেন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।

আন্দরকিল্লা মোড়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখে প্রবীণ নাগরিক সাহেদুজ্জামান চৌধুরী মন্তব্য করেন, ‘আঁরা বেগ্গুনে দেখিলাম পদ্মা সেতু। মন জুড়াই গেইয়ে। শেখর বেটি বাঁচি থক্’ (আমরা সবাই পদ্মা সেতু দেখলাম। মন জুড়িয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বেঁচে থাকুক)।

নগরের বিভিন্ন মোড়ে সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে টাঙানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে সকাল ৮টা থেকে কোরআনখানির আয়োজন করা হয়। সকাল ৯টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয় কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে। বড় পর্দায় দেখানো হয় সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী কার্যক্রম। আমন্ত্রিত অতিথিরা এসময় অনুভূতি প্রকাশ করেন।

‘আমার টাকায় আমার সেতু, বাংলাদেশের পদ্মা সেতু’ স্লোগানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে বর্ণিল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শনিবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর। বাংলাদেশ পুলিশের অন্যান্য ইউনিটের সদস্যরাও শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। মহানগর কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য সচিব অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, চট্টগ্রাম মহানগরী কমিউনিটি পুলিশিং এর অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ, সমাজের নানা স্তরের লোকজন শোভাযাত্রায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের উদ্যোগে নগরের হালিশহর পুলিশ লাইন থেকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন থানা থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।  এছাড়া সর্বস্তরের শ্রমিকদের আয়োজনে চট্টগ্রাম নতুন রেলস্টেশন থেকে অনুষ্ঠিত হয়েছে আনন্দ সমাবেশ। আয়োজন করা হয় শোকরানা মাহফিলও।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম চত্বরে সকালে নৃত্য পরিবেশন করে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর শিশু শিল্পীরা। চলে সংগীতানুষ্ঠান ও অনুভূতি প্রকাশ। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমান জানান, বিকেল ৪টা থেকে শুরু হচ্ছে কনসার্ট। গান গাইবেন জনপ্রিয় বিভিন্ন ব্যান্ড দল। এরপর আতশবাজিতে আলোকিত হবে চট্টগ্রামের আকাশ।  

নগরের পুরোনো রেলস্টেশনে বেলা তিনটায় শুরু হয় আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা। সভায় বক্তাদের আলোচনায় উঠে আসে পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফলতার কথা।

নগর ট্রাফিক পুলিশ অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইস্পাহানি মোড় থেকে কাজীর দেউড়ি, কাঠের বাংলো থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মোড়সহ কয়েকটি সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২ 
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।