ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পাহাড়ে অবৈধ বসতি ঠেকাতে প্রশাসনের কড়া বার্তা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
পাহাড়ে অবৈধ বসতি ঠেকাতে প্রশাসনের কড়া বার্তা

চট্টগ্রাম: পাহাড়ে অবৈধ বসতি ঠেকাতে কড়া বার্তা দিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন।  

মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তিনি এ বার্তাদেন।

 

এসময় বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, পাহাড়ে অবৈধ ও ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে। যেখানে উচ্ছেদ করা হবে সেখানেই কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।

জেলা প্রশাসন সেখানে গাছ লাগাবেন। গত কয়েক দিনে ২০৫ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব পাহাড় যেসব সংস্থার আওতাধীন তাদেরকেই রক্ষা করতে হবে।  

তিনি বলেন, আমাদের কমিটি সশরীরে গিয়ে ২৮টি পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। পাহাড় ধসে যে চারজন মানুষ মারা গেছেন। তাদের রাতেই আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে রাতেই বাড়ি চলে যায়।  

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, গ্যাস ও ওয়াসার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন পাহাড়ে তাদের কোনো সংযোগ নেই।  তবে বিদ্যুতের কিছু সংযোগ রয়েছে।  আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে বিদ্যুতের সংযোগগুলো অপসারণ করা যায়।  

আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমাদের ফান্ডে প্রায় ৯৩ লাখ টাকা আছে। সঠিক নীতিমালা না থাকায় আমরা তা ব্যয় করতে পারছি না। কিন্তু গত সভায় ‘পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি’ গঠন করা হয়। কমিটি বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে পাহাড়ি অঞ্চলে এখন কোনো দুর্ঘটনা হলে মানুষকে উদ্ধার করা এবং তাদের সহযোগিতায় এ অর্থ ব্যয় করা হবে। যেহেতু ফান্ডটি মানুষের অনুদানের টাকায়, তাই চট্টগ্রামের দানশীল মানুষদের কাছ থেকে ফান্ড নিয়ে এটি আরও সমৃদ্ধ করা হবে।

পাহাড়ে বসতি স্থাপনের নেপথ্যে কারা রয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নেপথ্যে যারা আছে, তাদের তালিকা প্রশাসনের কাছে নেই। তবে অবৈধভাবে যারা বসবাস করছেন তাদের সংখ্যাটি আমাদের কাছে আছে। আমরা হালনাগাদ করার চেষ্টা করছি। আশা রাখছি আগামী মাসখানেকের মধ্যে পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের হালনাগাদ তালিকা তৈরি সম্ভব হবে। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও রয়েছে। ভূমিহীন যারা পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করছেন, তাদের জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করতে চায়। ইতোমধ্যে আমরা নতুন একটি ছক তৈরি করেছি। এর মাধ্যমে যারা ভূমিহীন আছেন তাদের তালিকা করে সরকারি পদ্ধতিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছি।  

সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমান বলেন, পাহাড়গুলোতে কিছু এনজিও স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করে। এগুলো মনিটরিং করে সিটি করপোরেশন। এখানে এনজিওগুলো যাতে কোনো প্রকার নলকূপ বসাতে না পারে সে বিষয়ে সিটি করপোরেশনকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, আমরা প্রায় সবকটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করি। কিন্তু সেগুলো স্থায়ী থাকে না। পরে তারা আবারও সেখানে বসতি স্থাপন করে। যদি বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ আমরা বিচ্ছিন্ন করতে পারি তাহলে সেখানে বসবাসের সুযোগ থাকবে না।  

তিনি বলেন, আবহাওয়া একটু খারাপ হলেই আমরা পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে আসি। কিন্তু তারা সেখান থেকেও পালিয়ে যায়। তাই সে স্থাপনাগুলো আমরা উচ্ছেদ করেছি সেগুলো রক্ষা করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
বিই/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।