ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দক্ষিণ জেলা যুবলীগের শীর্ষ দুই পদের দৌড়ে ৫১ জন

মিনহাজুল ইসলাম,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২২
দক্ষিণ জেলা যুবলীগের শীর্ষ দুই পদের দৌড়ে ৫১ জন ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উজ্জীবিত হয়েছেন নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ ১১ বছর পর দক্ষিণ জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ২৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

এ সম্মেলন ও কমিটি গঠনকে ঘিরে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। এ সম্মেলনকে ঘিরে দক্ষিণের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া, কর্ণফুলী ও বোয়ালখালী উপজেলায় ফেস্টুন, ব্যানার, তোরণ ও বিলবোর্ডে ভরে গেছে।

আড়মোড়া ভেঙে যুবলীগের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে শীর্ষ পদ নিজেদের দখলে রাখতে নেতারা যে যার মতো তদবির করে যাচ্ছেন। শেষমুহূর্তে এসে কেউ কেউ ঘুরছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে। আবার কেউ কেউ ধরনা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের কাছে।  

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে পদপ্রত্যাশী নেতারা সম্মেলন সফল করার আহ্বান জানিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকাসহ সম্মেলনের স্থান পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে ফেস্টুন, ব্যানার, তোরণ ও বিলবোর্ড লাগিয়েছেন। তবে সম্মেলনকে ঘিরে ফেসবুকেও চলছে প্রচার-প্রচারণা।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে মৌলভী সৈয়দকে সভাপতি ও মোছলেম উদ্দিন আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের প্রথম কমিটি গঠিত হয়। সর্বশেষ ২০১০ সালে ২৩ জুলাই আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরীকে সভাপতি ও অধ্যাপক পার্থ সারথীকে সাধারণ সম্পাদকে কেন্দ্রীয় যুবলীগ কমিটি ঘোষণা করে। এই কমিটিই ২০১২ সালের ৬ জুলাই ৭১ সদস্য বিশিষ্ট দক্ষিণ জেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে।

কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, যোগ্যতায় যারা এগিয়ে থাকবেন-তারা শীর্ষ পদ পাবেন। সেক্ষেত্রে সাংগঠনিক দক্ষতা এবং দলের প্রতি নিবেদিতরাই পদে আসবেন। বিতর্কিতরা কোনোভাবেই যেন পদে আসতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। গত ২৬ মার্চ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংগঠনিক কমিটির জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে আগ্রহী নেতাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়। এতে সভাপতি পদের জন্য ১৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ৩৯ জনের আবেদন জমা পড়ে। এসব আবেদন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এছাড়াও গত ১০ মে আওয়ামী যুবলীগের দফতর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে  চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত অন্যান্য পদ-প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করা হয়। ১৪ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত জীবনবৃত্তান্ত জমা নেওয়া হয়েছে।  

সম্মেলন সফল করতে জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি ও কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম চৌধুরীকে আহ্বায়ক, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমান চৌধুরী ও রাজু দাশ হিরুকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। প্রস্তুতি কমিটিতে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সকল সাংগঠনিক ইউনিট ও পৌরসভার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্মেলনকে সুচারুভাবে সফল করতে গঠন করা হয়েছে ১২টি উপ কমিটি। কমিটি গুলো হচ্ছে অর্থ উপ কমিটি, প্রচার-প্রকাশনা উপ কমিটি, শৃঙ্খলা উপ কমিটি, আপ্যায়ন উপ কমিটি, মঞ্চ সাজসজ্জা উপ কমিটি, সাংস্কৃতিক উপ কমিটি, অভ্যর্থনা উপ কমিটি ও স্বাস্থ্য উপ কমিটি।

দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৫২ জন জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এখান থেকে যাচাই-বাছাই করে সম্মেলনের মাধ্যমে যুবলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- সভাপতি পদে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ সম্পাদক নাসির উদ্দিন মিন্টু, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফারুক, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি সদস্য ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সদস্য এমএ রহিম, জেলা যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আজম শেফু, বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন।  

সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নুরুল আমিন, বোয়ালখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাহবুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যাল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রাশেদ হোসাইন, আরমান হেলালী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য জামিল উদ্দীন, জেলা যুবলীগের সহ দপ্তর সম্পাদক রাজু দাশ হিরু ও সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক এসএম আজিজ। দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, থানা, কলেজ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগে কাজ করেছি। এককভাবে দুর্দিনে সংগঠনের জন্য কাজ করেছি। ১২ বছর আগে দক্ষিণ জেলা যুবলীগকে উজ্জীবিত করেছি। যে কারণে দক্ষিণের যুবলীগ এখন অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও সাংগঠনিক ইউনিট হিসেবে সমাদৃত।  

নাসির উদ্দিন মিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে যুবলীগের ইমেজ অন্য জায়গায় নিয়ে গেছে যুবলীগের চেয়ারম্যান। বর্তমানে অনেক ছাত্রলীগের নেতারাও যুবলীগ করতে চাইছে। যুবলীগের ধারাবাহিক ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য সভাপতি পদে সিভি জমা দিয়েছি।

দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলনে কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতৃবৃন্দ ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের ২০ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।  

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক, জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি ও কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলনকে সফল করতে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া সম্মেলনকে সুচারুভাবে সফল করতে গঠন করা হয়েছে ১২টি উপ কমিটি। প্রায় ২০০ জনের জন্য মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে কারা বসবেন সেটা কেন্দ্রীয় যুবলীগ ঠিক করে দেবে।  

আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম বদি বাংলানিউজকে বলেন, যোগ্য ও দলের জন্য ত্যাগ করেছেন, যারা যুব সমাজের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম ও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে তাদের মূল্যায়ন করা উচিত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad