ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পুলিশের কব্জি বিচ্ছিন্ন: রুবি আক্তার গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
পুলিশের কব্জি বিচ্ছিন্ন: রুবি আক্তার গ্রেফতার মো. জনি খান

চট্টগ্রাম: লোহাগাড়ার পদুয়া ইউনিয়নে আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশ সদস্য মো. জনি খানের বাম হাতের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করার মামলার ২ নম্বর আসামি রুবি আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার (১৫ মে) রাত ১২টার দিকে লোহাগাড়া শেষ সীমান্ত বান্দরবান জেলার লামা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার (১৫ মে) সকালে লোহাগাড়ার পদুয়া ইউনিয়নে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লালাখিল এলাকায় আসামি ধরতে গিয়ে মো. জনির বাম হাতের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে আসামিরা। এ ঘটনায় শাহাদাত হোসেন নামে আরেক পুলিশ সদস্য আহত হন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে জনিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। লোহাগাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভক্ত দত্তের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম রোববার সকালে একাধিক মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি কবির আহমদকে গ্রেফতার করতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবির আহমদের বাহিনী ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলে দায়ের কোপে কনস্টেবল মো. জনির বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেখান থেকে জনিকে উদ্ধার করে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) সুপার শিবলী নোমান বাংলানিউজকে বলেন, আসামি গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ, অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই-তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার ২ নম্বর আসামি ও হামলাকারী কবিরের স্ত্রী রুবি আক্তারকে রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে হামলাকারী কবির এখনও পলাতক। তাকে গ্রেফতারের অভিযান চলছে।

কনস্টেবল জনি খানকে রোববার (১৫ মে) ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ আল-মানার হাসপাতালে দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারে হাতের কব্জি জোড়া লাগানো হয়। বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে রাত ২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত টানা ৯ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে অস্ত্রোপচার শেষ হয়। আল-মানার হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যদের চিকিৎসক দল জনি খানের অস্ত্রোপচারে অংশ নিয়েছিলেন। তারা হলেন- অ্যানেসথেসিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. আলাউদ্দীন, ডা. মোস্তফা কামরুল ইসলাম, হাসপাতালটির প্লাস্টিক সার্জন ডা. হাসান নাজিরুদ্দীন সুমন ও ডা. শাকেরা।

আল-মানার হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট শাখার পরিচালক ডা. মো. শহিদুল্লাহ বলেছেন, আমাদের জন্য পুলিশ সদস্য জনি খানের অস্ত্রোপচারটি খুবই জটিল ছিল। একটা মানুষের সম্পূর্ণ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যাওয়া হাতে অনেক অংশ থাকে, সেগুলো আলাদা করে সিরিয়ালি বের করতে হয়েছে। জনি খানের অস্ত্রোপচার করতে সাড়ে ৯ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। জনি এখন পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত। তার হাতের স্বাভাবিক রং চলে এসেছে। নার্ভ যেগুলো জোড়া দেওয়া হয়েছে, সেগুলোরও সক্রিয় হতে শুরু করেছে। হাতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় হাতের উষ্ণতা চলে এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।