চট্টগ্রাম: নগরের দোকানগুলোতে যখন বিদেশি পণ্যের আধিক্য ঠিক তখনই দেশীয় পণ্যের বিশাল আয়োজন নিয়ে মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে আভিজাত শপিংমল আফমি প্লাজা। প্রায় সব ফ্লোরেই মিলছে দেশি পণ্য।
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সাদাকালো, নগরদোলা, বাংলার মেলা, কে-ক্র্যাফট, নিপুণ, বিবিআনা, অঞ্জনস, দেশাল, রঙ এবং সৃষ্টি। ক্রেতাদের রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী নতুন নতুন ডিজাইনে সব বয়সী মানুষের জন্য আরামদায়ক পোশাক এনেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ঐতিহ্য ও নিজস্ব স্বকীয়তায় তৈরি এসব নতুন পোশাক নজর কাড়ছে ক্রেতাদের।
আফমি প্লাজার পঞ্চম তলায় এক সঙ্গে ১০টি ফ্যাশন হাউসে এখন রঙবেরঙের কাপড়ের বিশাল সমাহার। প্রতিটি হাউসের আছে নিজস্ব সংগ্রহ। আধুনিকতার সমন্বয়ে সব দোকানেই দেশি পণ্য সাজিয়ে রেখেছেন। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই ঐতিহ্যের ছোঁয়া।
নারীর জন্য দেশি সিঙ্গেল সালোয়ার কামিজ, থ্রি-পিস, শাড়ি এবং পুরুষের পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, টি-শার্টসহ শিশু থেকে বৃদ্ধা সব বয়সের মানুষের পোশাক স্থান করে নিয়েছে দেশী দশের শো-রুমগুলোতে।
ষষ্ঠ তলায় রূপসজ্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পারসোনা বিউটি পার্লারের কর্মীরা। অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন তারা। ঈদ উপলক্ষে তারাও বিভিন্ন রূপসজ্জার ছবি টাঙিয়ে রেখেছেন। যে যেভাবে সাজতে চায় তাকে সেভাবেই সাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
চতুর্থ তলায় জুতা, মোবাইল এবং নারী পুরুষের দেশীয় কাপড়ের বিশস্ত প্রতিষ্ঠান বিশ্ব রং। যেখানের পাঞ্জাবি কিনতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। দেশীয় অভিজাত সব পোশাকের সমাহার এখানে। তৃতীয় তলায় পু্রুষদের আধুনিক পোশাক, জুতা, পারফিউম আর ডায়মন্ড হেভেন।
দ্বিতীয় তলায় প্রসিদ্ধ পাঞ্জাবির দোকান লিবাস, সারটাজ, এনডি, আজদা, ডিভাইন, শৈল্পিক, ছোট বাচ্চাদের পোশাকের দোকান মিমি মি, এমএএস, মেয়েদের জুয়েলারি এবং জুতার দোকান অপেলিয়া, মেয়েদের থ্রিপিসের দোকান ওয়াসিফা জাহিন, বোনানজা, কটন বুটিকস, আরশী, বোরকার দোকান লেডিস ফেয়ার, আপডেট, এমিরা, মেয়েদের ব্যাগের দোকান এঞ্জেল, অনলাইন গিফট শপ।
নিচতলায় ফুলের দোকান দিয়ে শুরু, রয়েছে ঘড়ির দোকান টাইম জোন, মেয়েদের পোশাকের দোকান প্রাইড, ফ্যাশেনেবেল ড্রেস, মেয়েদের জুয়েলারি দোকান দুল, ছেলেদের পোশাক ক্যাটস আই, রয়েল অ্যান্ড সান্এলাইন্স, জ্যান্টলম্যান, পাঞ্জাবির দোকান আর্টেক্স, গেঞ্জির দোকান লঘু। ছেলে-মেয়ে, বাচ্চা সবার দেশীয় পোশাকের সমাহার স্বদেশ পল্লীতে।
দেশী দশে কাপড় কিনতে আসা মেহেরুন্নেছা বাংলানিউজকে বলেন, কেনাকাটায় সময় বাঁচাতে এখানে এসেছি। একসঙ্গে একই ফ্লোরে ১০টি ভিন্ন ভিন্ন শো-রুম আছে, সেই সঙ্গে হরেক রকম ডিজাইনও এসব প্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে দেখা যায়। যাচাই-বাছাই করাও সহজে। এখানে পোশাকগুলো দেশীয় ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে লালন তৈরি করা হয়।
ক্রেতারা একটি থেকে বের হয়ে আরেকটিতে যাচ্ছেন। নেড়ে চেড়ে দেখছেন কাপড় আর বিভিন্ন নকশা। পছন্দ আর বাজেট মিলে গেলেই কিনে নিচ্ছেন। দেশী ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই এসব প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হয়েছে। দেশীয় সংস্কৃতিতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষের জন্য মান সম্মত পণ্য ‘দেশী দশে’ রয়েছে।
দিনে ক্রেতাদের তেমন সমাগম না থাকলেও স্কুল বন্ধ হওয়ায় দিনেও ভালো বেচাকেনার সম্ভাবনা দেখছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, দুই বছর করোনার দখল কাটিয়ে নতুন ভাবে নতুন পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করেছি। ব্যবসা ভালো। রমজানের শুরু থেকেই আমাদের বেচাকেনা জমজমাট। তবে, স্কুল কলেজ খোলা থাকায় দিনের বেলায় তেমন বেচাকেনা ছিল না। রাতে জমজমাট থাকতো। কিন্তু এখন স্কুল কলেজ বন্ধ হওয়ায় দিনের বেলায়ও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
আফমি প্লাজার সহকারী ব্যবস্থাপক স্বপন মুহরি বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর নতুন পুঁজিতে অনেক ব্যবসায়ী নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করেছেন। বেচাকেনা ভালো। শান্ত সুশৃঙ্খল মনোরম পরিবেশে এখানে ক্রেতারা সবকিছু কিনতে পারেন। সেজন্য সব বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ মার্কেট সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আমাদের এখানে বিনামূল্যে পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে ১০০টির বেশি গাড়ি পার্কিং করা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২২
বিই/টিসি
