ঢাকা, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাতিল হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার ৪ জনের স্বীকৃতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২২
বাতিল হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার ৪ জনের স্বীকৃতি ...

চট্টগ্রাম: মিথ্যা তথ্য দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৪ জনের স্বীকৃতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এর ৭৮তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ওই সভায় সারাদেশের ৮১ জনের মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেখানে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৪ জন রয়েছেন।

তারা হলেন- পটিয়ার রণজিত কুমার দাশ, সাতকানিয়ার হাফেজ আহমদ, বাবুল কান্তি দাশ এবং খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার চান মিয়া।

জামুকা সূত্রে জানা গেছে, উল্লিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দুই দফা শুনানি হয়। শুনানিতে তারা মুক্তিযোদ্ধার স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সহযোদ্ধাদের সাক্ষী হিসেবে হাজির করতে পারেননি। তাদের কেউ কেউ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য হলেও সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। অথচ মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে নিয়মিত ভাতা পেয়ে আসছিলেন। মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ভাতা বন্ধ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের আওতায় ৫টি ক্যাটাগরিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক ও বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধা, শব্দসৈনিকসহ ৩২ শ্রেণির স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার তথ্য যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই কার্যক্রমের আওতায় গত ১২ বছরে ১০ হাজারের বেশি মুক্তিযোদ্ধা নয়- এমন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাদের সনদ বাতিল করা হয়েছে।

আইন অনুযায়ী, মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়া হলে ৩ বছর কারাদণ্ড এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেওয়া হলে ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

এদিকে জামুকার সভায় জানানো হয়, যাদের গেজেট রয়েছে তাদের গেজেট বাতিল হবে। যাদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ রয়েছে তাদের সনদও বাতিল হবে। যাদের লাল মুক্তিবার্তা আছে তা বাতিল এবং যাদের গেজেট, সনদ ও লাল মুক্তিবার্তা রয়েছে তাদের সবকিছুই বাতিল করা হবে। চেষ্টা চলবে, এতদিন ধরে নেওয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ফেরত নেওয়ার।  

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক শওকত বাঙালি বাংলানিউজকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং ভাতা ও সরকারি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন, এটাই সবার চাওয়া। মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও যারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম লিখিয়েছেন, তারা নিশ্চয়ই গর্হিত কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, এটা প্রশংসনীয়।  তবে অ-মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা যেন এ প্রক্রিয়ায় বাদ না পড়েন। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান।

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২২ 
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।