ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প

১৮ খালের কাজ শেষে সিডিএকে হস্তান্তর করতে চায় সেনাবাহিনী 

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২২
১৮ খালের কাজ শেষে সিডিএকে হস্তান্তর করতে চায় সেনাবাহিনী  ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে সেনাবাহিনীর অধীন ৩৬ খালের মধ্যে ১৮টি খালের কাজ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের জুনে। সবকিছু ঠিক থাকলে এসব খাল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) বুঝিয়ে দিতে চায় সেনাবাহিনী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের আওতাধীন ৩৬ খালের কাজ চলমান রয়েছে এ প্রকল্পের আওতায়। এছাড়া বাকি খালগুলোর কাজ করছে সিডিএ।

জুনে কাজ শেষ হতে যাওয়া সেনাবাহিনীর আওতাধীন প্রকল্পের ১৮ খালের দৈর্ঘ্য ২৮ হাজার ৮৪ মিটার। এর মধ্যে ৬ হাজার ৯৫১ মিটার দৈর্ঘ্যের ৭টি খালের দুই পাশের রিটার্নিং ওয়ালের কাজ শেষ। এসব খালের খনন কাজও শেষ করে পানি চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। বাকি ২১ হাজার ১৩৩ মিটার দৈর্ঘ্যের ১১টি খালের কাজ শেষ হবে আগামী জুন মাসের মধ্যে।  

কাজ শেষ হওয়া ৭টি খাল হলো: ১ হাজার ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্যের রাজাখালী-২, ৫২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সদরঘাট-১, ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সদরঘাট-২, ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্যের কলাবাগিচা, চাক্তাই এলাকার ৭১৬ মিটার দৈর্ঘ্যের মরিয়মবিবি খাল, এয়ারপোর্ট এলাকার ২ হাজার ২৩ মিটার দৈর্ঘ্যের গুপ্তাখাল এবং নগরের আমবাগান এলাকার ১ হাজার ৮৭ মিটার দৈর্ঘ্যের আজব বাহার খাল।

কাজ চলমান রয়েছে ১১টি খালের। সেগুলো হলো: চান্দগাঁও শমসের পাড়া এলাকার ৩ দশমিক ৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ত্রিপুরা খাল, ২ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রুবি সিমেন্ট খাল, ৬৫৬ মিটার দৈর্ঘ্যের নয়াহাট খাল, ১ দশমিক ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফিরিঙ্গি বাজার খাল, ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টেকপাড়া খাল, ৭২০ মিটার দৈর্ঘ্যের মোগলটুলি খাল,  ২ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রামপুর খাল, ১ দশমিক ৭৭৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নাছির খাল, ২ দশমিক ৭৯৫ মিটার দৈর্ঘ্যের রাজাখালী-১, ১ দশমিক ৬ মিটার দৈর্ঘ্যের রাজাখালী-৩, এবং ২ দশমিক ৩৩৮ মিটার দৈর্ঘ্যের বাকলিয়া খাল।

এসব খালের কাজ শেষ হলে নগরের জলবদ্ধতা অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।  

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দ্রুত খাল খননের কাজ শেষ করতে চাই। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রকল্পের ৬৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পাধীন ৩৬ খালের মধ্যে ১৮ খাল চলতি জুন মাসের মধ্যে সিডিএকে বুঝিয়ে দিতে চাই। বাকি খালগুলোর কাজেরও অগ্রগতি রয়েছে। সামান্য কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে কাজ শেষ করতে একটু দেরি হচ্ছে।  

২০১৭ সালের আগস্টে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। এর মধ্যে ১ হাজার ৭৭৩ কোটি ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ বাবদ এবং ৩ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়। ইতিমধ্যে ২ হাজার ১১১ কোটি ৯৮ লাখ ব্যয় হয়েছে এ প্রকল্পে। ২০১৯ সালে শুরু হয় এ প্রকল্পের ভৌত কাজ। এবছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্প শেষ হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে দায়িত্বরত সিডিএ’র প্রকৌশলী আহমেদ মাইনুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এ প্রকল্পে সেনাবাহিনীর কাজ ছাড়া তেমন কোনও কাজ নেই। যা কাজ করছেন তারাই। তবে জমি অধিগ্রহণ বিষয়ে আমরা কিছু কাজ করছি। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন অফিসে ৮টি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তারা বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে বেশকিছু ভুল-ত্রুটি পেয়েছেন। তা পরিমার্জন করে আমরা আবারও প্রেরণ করেছি। ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। ফলে এ জটিলতা নিরসন করতে আরও ৩-৪ মাস সময় লাগতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২২
এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।