ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

একাত্তরে অস্ত্রবাহী সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ করেন বন্দর শ্রমিকেরা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২২
একাত্তরে অস্ত্রবাহী সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ করেন বন্দর শ্রমিকেরা বক্তব্য দেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম: সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের প্রাচীন ও প্রাকৃতিক বন্দর। বন্দরের ইতিহাস হাজার বছরের।

এ বন্দরকে ঘিরে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সমৃদ্ধ হয়। চট্টগ্রাম বন্দর বাঁচলে দেশ বাঁচবে এবং অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।
বন্দরের শ্রমিকেরা ইতিহাসের অনেক ঐতিহ্যবাহী ঘটনার সাক্ষী। ১৯৭১ সালে বাঙালি দমনের জন্য পাকিস্তানি সোয়াত জাহাজে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র নিয়ে বন্দরে নোঙর করতে চাইলে তা প্রতিরোধ করেছিলেন বন্দরের শ্রমিকেরা। সেদিন পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণে অনেক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন।  

তাই বন্দর শ্রমিকদের এ আত্মত্যাগ ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে, থাকবে। সেই বন্দর শ্রমিকদের নেতা ছিলেন শামশুল হক শফি। তিনি ছাত্রজীবনে পোর্ট কলোনিতে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে সাংগঠনিক কাজ শুরু করে পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরি নিয়ে চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর হাত ধরে শ্রমিক রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তার নেতৃত্বেই বন্দর রক্ষা আন্দোলনসহ শ্রমিকদের দাবি আদায় করা সম্ভব হয়েছিল।

সোমবার (২১ মার্চ) বিকেলে পোর্ট কলোনির শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বন্দর এলাকার নাগরিক কমিটির আয়োজনে জাতীয় শ্রমিক নেতা শামশুল হক শফির স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রেদওয়ানুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, নগর শ্রমিকলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল খালেক চৌধুরী, ডক বন্দর শ্রমিকলীগ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান খান, নারীনেত্রী নূরজাহান বারী, একেএম আলাউদ্দিন, শওকত হোসেন জগলু, মোকারম হোসাইন, সাইফুর রহমান স্বপন, মেজবাহ উদ্দিন মোর্শেদ, আব্দুল ওয়াহাব, নাছির উদ্দিন শামীম, সৈয়দ আহমদ বাদল, মো. সোলায়মান, আবু বক্কর মোল্লা, শামসুদ্দিন টুনু, আমির হোসেন, আব্দুর রহিম, শামশুল হক শফির ভাই ইকবাল উদ্দিন প্রমুখ।

মেয়র বলেন, জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয় বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে শামশুল হক শফি স্বৈরাচারবিরোধী ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার শারীরিক অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও শরীরের দিকে খেয়াল না রেখে সংগঠনের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গেছেন। এই রকম ত্যাগী নেতা আজকের দিনে পাওয়া বিরল।

বন্দর জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান খান বলেন, শামশুল হক ছিল আমার কমিটির সাধারণ সম্পাদক। সে একজন দক্ষ সংগঠক ছিল। সেই সঙ্গে ছিল বিনয়ী। আমরা যৌথভাবে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল, ১৪২টি ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সরকারের কাছে দাবিনামা পেশ করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দুইটি প্রকল্প একনেক সভায় গেলে তিনি তা অনুমোদন করেছিলেন। এভাবেই বন্দরের উন্নয়নের জন্য শফি এবং আমরা মিলে ভূমিকা রেখেছিলাম।

বন্দর ডক শ্রমিক নেতা আব্দুল খালেক চৌধুরী বলেন, বন্দর শ্রমিকলীগ এমএ হান্নানের হাতে গড়া সংগঠন। শামশুল হক শফি এই সংগঠনের নেতৃত্বে এসেছিলেন। এই সংগঠনের কারণে বিদেশি স্টিভিডোর কোম্পানির মাধ্যমে বন্দরকে বেসরকারি খাতে দেওয়ার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হয়েছিল। এই আন্দোলন সংগ্রামে শামশুল হক শফি ছিলেন অন্যতম কাণ্ডারী।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ২২ মার্চ, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।