ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

উপকূলে জলোচ্ছ্বাস, ক্ষুদে বিজ্ঞানীর অনন্য আবিষ্কার 

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২২
উপকূলে জলোচ্ছ্বাস, ক্ষুদে বিজ্ঞানীর অনন্য আবিষ্কার  নিজের প্রজেক্টের সামনে লা রাইবা কবির চৌধুরী

চট্টগ্রাম: সারি সারি সাজানো হয়েছে ৪০টি স্টল। প্রতিটি স্টলে প্রদর্শিত হচ্ছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন উদ্ভাবন।

যেখানে ভিড় জমিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা।

দর্শনার্থীদের নানান প্রশ্নের নিখুঁত উত্তরও দিয়ে যাচ্ছেন উদ্ভাবকরা।

বলছিলাম, সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারি ( ক.)'র ১১৬তমওরস শরিফ উপলক্ষে সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারি (ক.) ট্রাস্টের উদ্যোগে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাইজভাণ্ডারি একাডেমির ব্যবস্থাপনায় চতুর্দশ শিশু-কিশোর সমাবেশের কথা।

বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখতেই চোখে পড়ে এক ক্ষুদে বিজ্ঞানীর অন্যন্য এক আবিষ্কার। যে আবিষ্কার করেছে জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাসের। সেখানে জলোচ্ছ্বাসের ফলে সমুদ্রের পানি বৃদ্ধি পেতেই জ্বলে উঠবে হলুদ, সবুজ ও লালবাতি। সমুদ্রের পানি মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে সঙ্গে সঙ্গে সাইরেনের পাশাপাশি আজান দিয়ে উঠবে। তখন উপকূলের মানুষ সতর্ক হবে।

আবিষ্কারক লা রাইবা কবির চৌধুরী, চট্টগ্রামের পাথরঘাটার সেন্ট স্কলাসটিকাস গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।

বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংশ্লিষ্ট ম্যাগাজিন পড়ায় আগ্রহ তার। প্রায় ১৫শ বৈজ্ঞানিক কনটেন্টের আবিষ্কারক নিকোলা টেসলারের প্রজেক্টে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত সে।

মা সৈয়দা রিফাত জাহানের উৎসাহ ও সহায়তায় সে এ জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস প্রকল্পটি তৈরি করেছে। ক্ষুদে এই উদ্ভাবকের সৃষ্টি দেখেই উৎসাহী দৃষ্টি ও প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন অনেকে। জবাবও দিচ্ছেন দক্ষ বক্তার ন্যায়। নিজ প্রজেক্টের বিশ্লেষণ করে মুগ্ধ করছেন দর্শকদের। উক্ত প্রজেক্টের কাজ কী তা জানান আবিষ্কারক লা রাইবা কবির চৌধুরী।

আমরা জানি না কখন জলোচ্ছ্বাস হবে। উপকূলের গ্রামের মানুষ একদম জানে না। তাই জলোচ্ছ্বাসের ফলে দেশে অনেক ক্ষতি হয়। এ ক্ষতি থেকে দেশের সম্পদ এবং গ্রামের মানুষের জানমালের রক্ষার্থে আমার এ পরিকল্পনা।  

দেশে যখন জলোচ্ছ্বাস হবে তখন আমার এ প্রজেক্টে পর্যায়ক্রমে হলুদ সবুজ লাল তিনটি বাতি জ্বলবে। সমুদ্রের তীরে এ প্রকল্পটি স্থাপিত হবে। আর সমুদ্রের পানির সঙ্গে তার সংযুক্ত থাকবে। জলোচ্ছ্বাসের ফলে যখন পানি একটু বৃদ্ধি পাবে তখন হলুদ বাতি জ্বলে উঠবে। আর যখন এর চেয়ে বেশি পানি বৃদ্ধি পাবে সবুজ বাতি জ্বলবে। আর যখন বিপদসীমা অতিক্রম করবে যখন লালবাতি জ্বলবে৷ সেই সঙ্গে সাইরেন এবং আজান দেবে। তখন মানুষ সতর্ক হবে আশ্রয়ন প্রকল্পে আশ্রয় নেবে।  

১৯৯১ সালে দেশে যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল তখন লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। ক্ষতি হয়েছে অনেক সম্পদের। তখন মানুষ জলোচ্ছ্বাসের প্রভাব সম্পর্কে জানত না৷ তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেক বেশি ছিল। জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে দেশের সম্পদ এবং মানুষকে রক্ষা করতেই আমার এ প্রয়াস। যোগ করল লা রাইবা কবির চৌধুরী।

মা সৈয়দা রিফাত জাহান বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়ে ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট। সে সব সময় সাধারণ বিষয়কে একটু অন্যভাবে দেখে। ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করে। আমরাও তাকে সহযোগিতা করেছি সবসময়। সর্বশেষ জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস প্রজেক্টটি আবিষ্কার করেছে। এটি জলোচ্ছ্বাসের দেশের সম্পদ এবং মানুষের জানমালের রক্ষা করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২২
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।