চট্টগ্রাম: চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে প্রকৃতিগতভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত শহর। এ শহর অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠায় এর সৌন্দর্য এখন ভূলুণ্ঠিত।
চট্টগ্রাম শহরের ওয়ার্ডগুলোতে যেখানে খালি বা উন্মুক্ত জায়গা আছে সেখানে ছোট বড় খেলার মাঠসহ শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য নানা সরঞ্জামসহ পার্ক স্থাপনের বিষয়টি আমার নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি আর্কিটেক্ট প্রতিনিধিদল কর্তৃক চসিকের উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ক পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপনকালে মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, একটি নগরের সৌন্দর্য তখনই চোখে পড়ে যখন প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে সমন্বয় হয়। সে কারণে অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের অবয়ব ও পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে বিনোদনযোগ্য করতে পারলে তা প্রকৃত অর্থে সৌন্দর্যের অধিকারী হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুল হুদা, কামরুল ইসলাম, ঝুলন কুমার দাশ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আর্কিটেক্ট প্রতিনিধি দলের ইকবাল হাবিব, ইসতিয়াক জহির, চসিক নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ, ফরহাদুল আলম, আশিকুল ইসলাম, আবু সিদ্দিক, শাহিনুল ইসলাম, ফারজানা মুক্তা ও স্থপতি আব্দুল্লাহ আল ওমর।
মেয়র বলেন, পাহাড়, নদী, সমুদ্রবেষ্টিত নগর চট্টগ্রাম নগর প্রাকৃতিকভাবে সাজানো একটি নগর। এই নগরকে একসময় প্রাচ্যের রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি, ঘর, বিপণিবিতান ও দোকানপাটসহ অবৈধভাবে রাস্তা, ফুটপাত, খাল ও নালা দখল করার ফলে শুধু সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়নি, বলতে গেলে বসবাসের অযোগ্য একটি নগরে পরিণত করা হয়েছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য পুরাতন মাস্টারপ্ল্যান অনুসরণ করে নতুনভাবে যুগোপযোগী মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা আজ সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি নগরের যে সব খাল-নালা অবৈধ দখলদারদের দখলে চলে গেছে সিএস, আরএস খতিয়ানের আলোকে তা পুনরুদ্ধারের জন্য চসিক কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আর্কিটেক্ট প্রতিনিধি দল আগ্রাবাদ ডেবা, জোড় ডেবা, ভেলুয়ার দীঘি, বহদ্দার পুকুর, বহদ্দার বাড়ি জামে মসজিদ পুকুর, চর চাক্তাই স্কুল সংলগ্ন মাঠ, ফিরোজ শাহ ঈদগাহ মাঠ, ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট, শহীদ শাহাজাহান সংঘ মাঠ, পলোগ্রাউন্ড কলোনি মাঠ, হালিশহর এ-ব্লক, বি-ব্লক, এইচ-ব্লক, হালিশহর শিশুপার্ক জে-ব্লক, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের বক্স আলী রোড, পোস্তারপাড় থেকে দেওয়ানহাট ব্রিজের নিচ পর্যন্ত, হালিশহর বিডিআর মাঠ, আউটার স্টেডিয়াম, সিআরবি হিলের সৌন্দর্যবর্ধন করার প্রস্তাব দেন। এতে খসড়া ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৬ কোটি টাকা।
মেয়র তাদের প্রস্তাবের আলোকে বলেন, প্রস্তাবিত স্থানগুলো বেশিরভাগই অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন। বাংলাদেশ রেলওয়ে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ওয়াসা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সব সেবা সংস্থার সঙ্গে মতবিনিময় ও পরামর্শ নিতে হবে বলে জানান।
প্রস্তাবিত স্থানগুলোর সঙ্গে বাটালি হিল, ঠান্ডাছড়িকে যুক্ত করার জন্য মেয়র আর্কিটেক্ট দলকে আহ্বান জানান। তিনি নগরবাসীর জন্য স্থানীয় সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত প্রকল্পটি একটি নতুন সামঞ্জস্যপূর্ণ ভবিষ্যৎ নির্মাণের রূপরেখা বলে উল্লেখ করেন।
নগরের উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আর্কিটেক্ট প্রতিনিধি দল।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২১
এআর/টিসি