ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সেই ভুয়া বন্দর সচিবের ছবি দেখে ভুক্তভোগীর আরেক মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
সেই ভুয়া বন্দর সচিবের ছবি দেখে ভুক্তভোগীর আরেক মামলা সেকান্দর আলী

চট্টগ্রাম: বিভিন্ন চাকরি প্রার্থীদের চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব পরিচয় দিয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার সেকান্দর আলীর নামে আরও একটি মামলা হয়েছে। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নেজাম উদ্দীন।

আব্দুল মতিন নামে এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলাটি করেন। সেকান্দর আলী নগরের চান্দগাঁও থানার মধ্যম মোহরা সদর আলী মুন্সির বাড়ির মৃত জাফর আহম্মদের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সেকান্দরের সহযোগী নুর মোহাম্মদের মাইক্রোবাস ভাড়া করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে যেতেন আব্দুল মতিন। সেকান্দর নিজেকে বন্দরের সচিব পরিচয় দিয়ে বন্দরে চাকরি করবে কি না জানতে চায়। মতিন রাজি হলে ২০১৭ সালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে ডার্ক রুম সহকারীর একটি পদ এখনো খালি আছে বলে জানায়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালকের (প্রশাসন) স্বাক্ষর ও সিল সম্বলিত একটি নিয়োগপত্রও দেখায়। সেই চাকরির জন্য গত ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর আব্দুল মতিন প্রথমে প্রাইম ব্যাংকের দুই লাখ টাকার একটি চেক এবং পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আরও তিন লাখ টাকা নগদ দেন। একইভাবে মতিনের বন্ধু আলমগীর কবিরকেও চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালকের সিল-স্বাক্ষর সম্বলিত নিম্নমান বহিঃসহকারীর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। ভেরিফিকেশনের জন্য তাদের স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ যাবে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলে জানান সেকান্দর। চাকরিতে যোগদানের জন্য দু’জনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ করে আরও ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন।  

এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে নগরের চান্দগাঁও থেকে সেকান্দর আলী (৫৫) নামে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। রিয়াজউদ্দিন বাজারের মুরগিহাটা লেনে একটি চায়ের দোকানদারকে সেকান্দর আলী চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব পরিচয় দেন। পরে ছেলেকে চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরি দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তখন সেকান্দর আলী নামে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব পরিচয় দিয়ে সেকান্দর নামে এক প্রতারক নগরের ও জেলার বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীদের বন্দরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অগ্রীম টাকা নিত। পরবর্তীতে ইন্টারনেট থেকে ভুয়া নিয়োগপত্র সংগ্রহ করে প্রার্থীদের বাসায় এবং ভুয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাগজ ডাকযোগে থানায় পাঠাত। থানা থেকে পুলিশ চাকরিপ্রার্থীদের বাড়িতে গেলে সেকান্দার চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে চাকরি হয়ে গেছে বলে অবশিষ্ট টাকা আদায় করত।  

সেকান্দর পেশাদার প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রতারণা করে জীবিকা নির্বাহ করাই একমাত্র উৎস। সুযোগ বুঝে বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীর সরলতার সুযোগে চাকরি দেবে বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সংঘবদ্ধভাবে বন্দর থেকে বিভিন্ন মালামাল নিলামের তথ্য সংগ্রহ করতেন। বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে বন্দরের উক্ত নিলাম পণ্য নিয়ে দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। পরে আত্মগোপনে চলে যেতে বলে স্বীকার করেন।  

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, প্রতারক সেকান্দর আলীকে গ্রেফতারের ছবি সংবাদপত্রে দেখে ভুক্তভোগী আব্দুল মতিন থানায় এসে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন। মামলায় প্রতারক সেকান্দর আলীকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।