ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

১৮ মাস পর প্রিয় আঙিনায় শিক্ষার্থীরা

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
১৮ মাস পর প্রিয় আঙিনায় শিক্ষার্থীরা ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: নগরের হামজারবাগ রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আখতার ইজমা। প্রথম শ্রেণী থেকেই এ স্কুলে পড়ালেখা তার।

স্কুল বাড়ির পাশেই হওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে তার শৈশব এই স্কুল প্রাঙ্গনেই। করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়ির ছাদ থেকে উঁকি দিয়ে দেখতেন প্রিয় আঙিনা।
অনেক দিন দেখা নেই প্রিয় সহপাঠীদের সঙ্গে।  

রোরবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে আটটা। তখনও স্কুলে তেমন কেউ আসেননি। কিন্তু ইজমা এসেছেন। দীর্ঘ ১৮ মাস পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে সরকার। তাই দীর্ঘদিন পর প্রিয় সহপাঠীদের সঙ্গে মিলিত হতে আগেই চলে এসেছেন চিরচেনা সেই অঙ্গনে। সহপাঠীরাও একের পর এক আসতে শুরু করেছে। সবার মধ্যে এ এক অন্য রকম আনন্দ উচ্ছ্বাস।  

দীর্ঘদিন পর দেখা হওয়ায় আবেগাপ্লুত হয়েছেন অনেকেই। একজন অন্যজনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেছেন। শিক্ষকরাও তাদের সহকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও চলছে দীর্ঘ সময়ে জমে থাকা আড্ডা। যেন ফিরে পেয়েছে সেই সোনালী অতীত।

শুধু হামজারবাগ রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়েই নয়, নগরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ঘুরে একই দৃশ্য দেখা গেছে।

ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলিমা দেবী বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন পর আমরা সবাই এক সঙ্গে মিলিত হবো কল্পনাই করতে পারিনি। করোনা মহামারী আমাদের এ পরিস্থিতিই দাঁড় করিয়েছিল। আমরা সেই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি।

নগরের কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আদিল নূরী বাংলানিউজকে বলেন, আবার প্রিয় ক্যাম্পাসে আসতে পারবো কিনা তা নিয়ে হতাশ ছিলাম। কিন্তু নিজেদের পড়ালেখা চালিয়ে নিয়েছিলাম অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করার মাধ্যমে। অনেকদিন পর প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে অনেক আনন্দিত। এক সঙ্গে বসা হয়নি দীর্ঘদিন।  

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ১৮ মাস ধরে বন্ধ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত কয়েক দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। অবশেষে রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের মধ্য দিয়ে খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

এদিকে সশরীরে ক্লাসের যেমন আনন্দ রয়েছে তেমনি রয়েছে সংশয়। করোনার হাত থেকে কবে মুক্ত হবে পৃথিবী, এ প্রশ্ন এখন সবার মনে। তবে প্রশ্ন করলেই চলবে না, মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। পরতে হবে মাস্ক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতির সঙ্গে অনেকগুলো শর্ত জুড়ে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেদিকে বেখেয়াল হলে চলবে না।

নগরের এনায়েত বাজার কলিমুল্লাহ মাস্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখর দাশ বাংলানিউজকে বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী আমরা শত ভাগ প্রস্তুত। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আমরা খুব কঠোর থাকবো।  

স্কুল কলেজের প্রস্তুতি নিয়ে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহেদা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি সব নির্দেশনা মেনেই স্কুল খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি যাতে সব শিক্ষার্থী মেনে চলে সে ব্যাপারেও নজর রাখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পাঠ দানের সুবিধার্থে আমরা দুই শিফটে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছি।  

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর ১৯ টি নির্দেশনা দিয়েছেন। চট্টগ্রামের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও সে সব নির্দেশনা মানতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২. ২০২১
এমএম/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।