ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তিন শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি আমরা: মেয়র রেজাউল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২১
তিন শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি আমরা: মেয়র রেজাউল চবির গবেষণা প্রতিবেদন গ্রহণ করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী

চট্টগ্রাম: তিন শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করছি। সেগুলো হচ্ছে- কোভিড, ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া।

চট্টগ্রামেও ডেঙ্গুতে দুই-একজন মারা গেছেন। ঢাকাতে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে না পারলে ভয়ানক আকার ধারণ করবে। চসিকের নিয়মিত মশকনিধন কার্যক্রম চলমান আছে।  

বুধবার (৪ আগস্ট) মশকনিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করছি। একদিনে ৪টি ওয়ার্ডে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালাব। একসঙ্গে ১০০ জন মশকনিধনকর্মী কাজ করবে। ১০ দিনে সব ওয়ার্ড শেষ করবো। এক মাস ৪১ ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে এ কর্মসূচি চলবে।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) চসিকের সম্মেলন কক্ষে মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) গবেষকদলের প্রতিবেদন হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এসব কথা বলেন। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এ সময় গবেষকদলের সদস্য, কাউন্সিলর ও চসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, গবেষণা প্রতিবেদনে লার্ভিসাইডের (মশার ডিম নষ্ট করার ওষুধ) সঙ্গে ডিজেল মিশিয়ে স্প্রে করলে মশা দ্রুত মারা যাবে। চসিকের পর্যাপ্ত লার্ভিসাইড ওষুধ ও কালোতেল রয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে নতুন এডাল্টিসাইড (উড়ন্ত মশা মারা ওষুধ) কেনা হবে। ইতিমধ্যে নতুন করে ১০টি টু স্ট্রোক লার্ভিসাইড ওষুধ ছিটানোর মেশিন কিনেছে চসিক। বুধবার সকালে বিপ্লব উদ্যানে ক্রাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধন হবে।    

মেয়র বলেন, পরশু সমন্বয় সভা করেছি। দেড় হাজার ভলান্টিয়ার নিয়োগ দিয়েছি। তারা ঘরে ঘরে গিয়ে অসচেতন জনগণকে সচেতন করবে। যারা ছাদবাগান করেছে সেখানে টবে পানি জমে আছে, পরিষ্কার করছে না। আমাদের ভলান্টিয়ার ওই পানি ফেলে দেবেন। অবশ্য সব জায়গায় ওঠা সম্ভব হবে না। তারা বার্তা দেবে- স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্মে। মাইকিং, লিফলেট, স্বেচ্ছাসেবীর কাজ চলছে। ৪১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা খুব সজাগ রয়েছে। তারা স্ব উদ্যোগে কাজে নেমেছেন।  

চবির গবেষণা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ফগার মেশিন দিয়ে এত ওষুধ ছিটানোর পর চট্টগ্রামের নাগরিকেরা বলেন, মশার কামড়ে অতিষ্ঠ। এরপর চিন্তা করলাম ওষুধের কার্যকারিতা নির্ণয়ের। চবি উপাচার্যকে অনুরোধ জানাই, মশার ওষুধ নিয়ে গবেষণার জন্য। আজ সেই কাজের প্রতিবেদন সবার সামনে উপস্থাপিত হলো।
মেয়র বলেন, একটি স্প্রে মেশিনের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি দাম ফগার মেশিনের। এ মেশিনের পরিবর্তে যে স্প্রে মেশিন ব্যবহার করতাম তা নিয়ে এগিয়ে গেলে অনেক বেশি সুফল পাব। স্প্রে মেশিন সবচেয়ে উপযোগী বলে মনে করি। ফগার মেশিন দিয়ে যে ওষুধ ছিটানো হয় তার কার্যকারিতা নগন্য। লার্ভিসাইড এডাল্টিসাইড মেশিন দিয়ে ওষুধ স্প্রে করলে বেশি সুফল পাব।  

ছোটবেলায় নালায় ছোট ছোট মাছ দেখতাম। এখন বুঝি সেগুলো মশার লার্ভা খেয়ে ফেলত। বদ্ধ জলাভূমিতে ওই মাছ ছেড়ে দিতে পারলে কোটি কোটি টাকার ওষুধ সাশ্রয় হবে। পরিবেশেরও ক্ষতি হবে না। অতিরিক্ত কেমিক্যাল ওষুধ ছিটালে মশা মারতে গিয়ে নিজেই মরতে বসব। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মশকনিধনে নিয়োজিত কর্মচারী আছেন তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে যে ওষুধ ব্যবহার করলে মশার উপদ্রব থেকে পরিত্রাণ পাব সেটা ব্যবহার করব।  

এখন আমরা আশ্বস্ত হতে পেরেছি কোন ওষুধ ব্যবহার করলে মশা মারতে পারব। আগে বছরের পর বছর মশার ওষুধ ব্যবহার করেছি কিন্তু আন্দাজে ব্যবহার করেছি। হয়তো কখনো বেশি ওষুধ ব্যবহার করেছি, কখনো কম ব্যবহার করেছি। পুরোপুরি সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। আজ একটি যুগান্তকারী দিন। আমরা একটু স্বস্তি পাচ্ছি- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। পথ দেখিয়েছেন মশকনিধন ও ওষুধের কার্যকারিতার বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা দিয়েছেন। সেই ধারণা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।  

এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, এডাল্টিসাইড ওষুধ ছিটানোর জন্য নতুন মেশিন কিনেছি। ফগার মেশিন ১৭টি নষ্ট হয়েছে। একটি ওয়ার্ডে ২টি ফগার মেশিনের হয়তো একটি নষ্ট হয়েছে। সেগুলো ঠিক করতে দিয়েছি। কালকের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। চলমান মশকনিধন কার্যক্রম চলবে। ক্রাশ প্রোগ্রামের জন্য ফগার মেশিন আছে।  

কোভিডের জন্য সুরক্ষা কমিটি করে দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। আইসোলেশন সেন্টার ভালোভাবে চলছে। অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করেছি। কোভিড সংক্রমণ রোধে যত প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া দরকার চসিক সব ব্যবস্থা নিয়েছে। যোগ করেন মেয়র।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২১
এআর/টিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।