ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ক্রেতা কম গরুর বাজারে, উদ্বেগ বিক্রেতা ও ইজারাদারের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২১
ক্রেতা কম গরুর বাজারে, উদ্বেগ বিক্রেতা ও ইজারাদারের ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আছে মাত্র ২ দিন। কিন্তু বন্দরনগরে এখনও জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট।

এ কারণে গরুর বাজারে উদ্বিগ্ন বিক্রেতা ও ইজারাদারেরা। প্রতি বছর এ সময় নগরের বাজারগুলোতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা হয় প্রচুর গরু।
কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা সংক্রমণের কারণে থমকে যাওয়া সবকিছুর মতো কোরবানির পশুর হাটেও লেগেছে সেই ধাক্কা। ফলে ট্রাকে ট্রাকে গরু নিয়ে বেপারিরা আসছেন ঠিকই, তবে গত কয়েক বছরের মতো নয়। গত কয়েক বছর এ সময় অনেক গরু ও ছাগল বিক্রি হয়েছে।  

সোমবার (১৯ জুলাই) গরুর বাজারে মানুষের উপস্থিতি ভালো হলেও বেচাকেনাও কম। এ অবস্থায় টেনশনে থাকা বেপারিদের ভরসা সামনের ১ দিন। ক্রেতার খানিকটা অভাব থাকলেও বাজারগুলোতে পশুর কোনো অভাব নেই।

গরুর বাজারের কারণে প্রতিবছর বিভিন্ন রাস্তায় মানুষের ভোগান্তি চরমে থাকলেও এখনো গরুর বাজারে কোনো ধরনের যানজট দেখা যায়নি। গরুর বাজারে নিয়োজিত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ট্রাফিকের মতো গরুর বাজারে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরাও ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। রাস্তার পাশে গোখাদ্যে ভরপুর থাকলেও বিক্রেতারা অলস সময় কাটাচ্ছেন। নগরে পশুর স্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে সাগরিকা পশুর বাজার, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার।  

দেখা গেছে, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়াসহ উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে চট্টগ্রামে বাজারগুলোতে গরু এনেছেন ব্যবসায়ী-খামারিরা। বাজারে এক ছাউনির নিচে সারি বেঁধে বড় ও ছোট ২০-৩০টি গরু রাখা হয়েছে। ফ্রিজিয়ান, শাহিওয়ালসহ দেশি বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। করোনার সংক্রমণ রোধে ৩ ফুট দূরত্বে থাকার স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বাজারগুলোতে। বয়স্কদের বাজারে না যাওয়ার নির্দেশনা থাকলেও অনেক প্রবীণকে বাজারে দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়েও সচেতনতা নেই।

চট্টগ্রাম ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মালেক মো. ওমর বাংলানিউজকে বলেন, মানুষ খামার থেকে গরু কিনে খামারেই রেখে দিচ্ছে। এখন যে হারে গরু বিক্রি হচ্ছে আশা করছি বাকি গরুগুলো ভালো দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে। এখন পর্যন্ত শুধু অনলাইনেই গরু বেচাকেনা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজারের মতো। এ ছাড়া হাটগুলোতে প্রায় ২ লাখের বেশি গরু বেচাকেনা হয়েছে। নগরের ১৬ থানার হিসাব সোমবার রাতে জানাতে পারব।  

বিবিরহাটে গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে দেশি গরু বেশি। এ পর্যন্ত যে পরিমাণ গরু এসেছে, অধিকাংশই দেশি গরু। মাঝেমধ্যে ক্রেতারা আসছেন। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার গরু কিছুটা কম। ছোট ও মাঝারি গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। কিন্তু অনেক গরু বাজারে থেকে যাবে।  

বিবির হাট গরুর বাজারের ইজারাদার আনোয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে বাজারে প্রচুর গরু এসেছে। কিন্তু সেই তুলনাই বিক্রি হচ্ছে না। এ বছর গরুর বাজারে অনেক গরু থেকে যাবে। বাজারে অনেক গরু আছে ক্রেতা নেই। ইজারা নেওয়ার অর্ধেক টাকা তুলতে পারব কিনা সন্দেহ আছে। অন্য বছর এ সময় অনেক ক্রেতা থাকে কিন্তু এই বছর তেমনটি নেই।

পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার ও মইজ্জারটেক গরুর বাজারের ইজারাদার জামশেদ বাংলানিউজকে বলেন, সরকার আমাদের কাছে বাজার ইজারা দিয়েছে। অন্যদিকে অনলাইনে গরু বিক্রি করতে উৎসাহ দিচ্ছেন। গরু বাজারের শতভাগ রাজস্ব দেওয়া হচ্ছে কিন্তু অনলাইন থেকে কোনো ধরনের রাজস্ব দিচ্ছে না। গরু বাজার ইজারাদারদের ভাসিয়ে দেওয়া মতো হচ্ছে। কোনো অবস্থাতে লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। মইজ্জারটেক বাজার ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছি কিন্তু ২ কোটি টাকা লসে থাকব।  

বাংলাদশে সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২১
এমএম/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।