চট্টগ্রাম: নগরের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে উপজেলায়। ১৪ উপজেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
চট্টগ্রামে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ১ থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ৮ দিনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, উপজেলাগুলোতে মোট শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৪৪ জন।
উত্তর চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে সীতাকুণ্ডে ২৩৮ জন। সংক্রমণের হার ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়া হাটহাজারীতে ১৮৭ জন, মিরসরাইয়ে ১৭৬ জন, রাউজানে ১৪২ জন, ফটিকছড়িতে ১২৪ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৮৫ জন এবং সন্দ্বীপ উপজেলায় ২৫ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে পটিয়ায় ৪৭ জন। সংক্রমণের হার ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এছাড়া আনোয়ারায় ৪৬ জন, বোয়ালখালীতে ৪৪ জন, বাঁশখালীতে ৩৪ জন, চন্দনাইশে ৩৩ জন, লোহাগাড়ায় ৩৩ জন এবং সাতকানিয়া উপজেলায় ৩০ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের চেয়ে উত্তর চট্টগ্রামে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পিছনে কি কারণ হতে পারে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটি, চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের চেয়ে উত্তর চট্টগ্রামে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পিছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে একটি কারণ হতে পারে উত্তর চট্টগ্রামের সঙ্গে মহানগরের যাতায়াত অত্যন্ত সহজ। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সিভাসু ল্যাব কাছে হওয়ায় এসব এলাকার নমুনা পরীক্ষাগুলো খুব সহজে হয়ে থাকে। ফলে সংক্রমণের হারও দৃশ্যমান। অন্যদিকে দক্ষিণ চট্টগ্রামে করোনা পরীক্ষা ততটা সহজলভ্য নয়।
তিনি আরও বলেন, আরও কারণের মধ্যে হতে পারে উত্তর চট্টগ্রামে প্রবাসিদের সংখ্যা দক্ষিণ চট্টগ্রামের চেয়ে বেশি। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মানতেও সাধারণ মানুষের মধ্যে অনিহা আরও একটি বড় কারণ হতে পারে।
করোনা চিকিৎসা দেওয়া চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট আবদুর রব মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে যেসব রোগী আসছে এরমধ্যে নগরের পাশাপাশি উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ উপজেলা এলাকার রোগী রয়েছে। বেশি সংকটাপন্ন রোগীরাই ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। করোনা সংক্রমণ যে উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বাংলানিউজকে বলেন, এন্টিজেন টেস্ট চালু হওয়ায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে। দ্রুত রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। উপজেলা সমূহের জনগণ সাধারণত করোনা নিয়ে সচেতন নন। জ্বর-সর্দি-কাশি হলে চিকিৎসকের কাছে আসতে চান না। তাই এসব এলাকায় সংক্রমণের হার বাড়ছে। বর্তমানে সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে যত বেশি টেস্ট হবে, তত বেশি রোগী শনাক্ত করে চিকিৎসার আওতায় আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০২১
এমএম/টিসি