ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৫ মহররম ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে গরুর হাট, মানতে হবে শর্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:২৫, জুলাই ৭, ২০২১
চট্টগ্রামে গরুর হাট, মানতে হবে শর্ত ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গরুর হাটে বেচাকেনা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মনে ভর করেছে চিন্তা। অনেকগুলো শর্ত মেনে এবারের হাট বসাতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

জানা গেছে, চট্টগ্রামে সপ্তাহে একদিন হাট বসবে। নগরে ছয়টিসহ চট্টগ্রামে মোট ২০৬টি হাট বসার কথা রয়েছে।

এসব হাটের জন্য ৩০টি ভেটেরিনারি চিকিৎসক টিম থাকবে। চট্টগ্রামে দিনে গড়ে ২০টির অধিক হাট বসবে না।

ব্যবসায়ী ও খামারিরা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে হাট না বসলে তাদের ব্যা পক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। চট্টগ্রামের পশুর হাটগুলোকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির পশু নিয়ে আসেন ব্যবসায়ী-খামারিরা। এবারও নির্দেশনা মেনে হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যিবস্থা রাখা হবে। মাপা হবে শরীরের তাপমাত্রা। ঠান্ডা, জ্বর ও কাশিতে আক্রান্তদেরকে হাটে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। স্বাস্থ্যবিধি সংবলিত ব্যানার, পোস্টার টাঙানোসহ সবসময় মাইকে প্রচারের ব্যবস্থাও থাকবে বলে জানান হাট ইজারাদাররা।  

আগামী ১২ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিনের জন্য নগরে তিনটি অস্থায়ী বড় হাট বসার কথা রয়েছে। এছাড়া স্থায়ী তিনটি হাটে সারাবছরই পশু বেচাকেনা হয়। হাট অনুমোদনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) ১৭টি শর্ত দিয়েছে।  

শর্ত অনুযায়ী, প্রধান সড়ক হতে ন্যূনতম ১০০ গজ দূরে সুবিধাজনক স্থানে হাট বসাতে হবে, যাতে প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচলে কোনভাবেই বিঘ্ন না ঘটে। হাটের চৌহদ্দির বাইরে এবং রাস্তায় কোনও পশু রাখা বা খুঁটি স্থাপন করা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। প্রবেশ ও বাহিরপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান-পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। হাটে একদিকে প্রবেশ এবং অন্যদিকে বাহির হওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাতে জটলা সৃষ্টি না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।

এছাড়াও বৃদ্ধ ও শিশুদের পশুর হাটে প্রবেশ নিরুৎসাহিত করতে হবে। অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়কে উৎসাহ প্রদান এবং হাটে ইজারাদাররা নিজস্ব পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবে। হাটে পশুর সুস্থতা যাচাই করার জন্য ভেটেরিনারি চিকিৎসকের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। বাজার এলাকা নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার রাখবে।  

হাটের গুরুত্বপূর্ণস্থানে ইজারাদারদের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগাতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোনও সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্যা সমাধান করবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বা শর্তাদি লঙ্ঘনের কারণে হাটের অনুমতি বাতিল করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। রাস্তায় পশু পরিবহনের সময় ইজারাদার কিংবা তার মনোনীত প্রতিনিধি কোনও প্রকার পশু পরিবহনকারী গাড়ির পথ পরিবর্তন কিংবা নিজ হাটে পশু আনতে বাধ্য করতে পারবেন না। সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রবেশ ও বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সবাইকে মাস্ক পড়তে হবে। চাঁদা আদায় এবং ক্রেতা-বিক্রেতাকে হয়রানি করা যাবে না। জাল নোট শনাক্তকরণে যন্ত্র স্থাপন করতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রেয়াজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, মানুষ খামার থেকেও গরু কিনছে। গরু কিনে ওই খামারেই রেখে দিচ্ছে। কোরবানির আগের দিন নিয়ে আসবে। এখন যে হারে গরু বিক্রি হচ্ছে, তাতে প্রায় ৬০ শতাংশ গরু বেচা-কেনা হয়ে যাবে। বাকি ৪০ শতাংশ বেচা-কেনা হবে হাট থেকে। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে সেজন্য ইজারাদার মাইকিং করবে। ক্রেতাদের প্রতি পরামর্শ হলো, অতিরিক্ত লোক আনার দরকার নেই। যত দ্রুত সম্ভব গরু কিনে বাজার ত্যাগ করতে হবে।

ডা. রেয়াজুল হক জানান, শহরের ছয়টিসহ চট্টগ্রামে এবার ২০৬টি হাট বসবে। এসব হাটের জন্য অন্তত ৩০টি ভেটেরিনারি চিকিৎসক টিম তৈরি থাকবে। তবে এখানে সুবিধা হলো- নির্দিষ্ট এলাকায় সপ্তাহে একদিন হাট বসবে। সেই হিসেবে চট্টগ্রামে দিনে গড়ে ২০টির অধিক হাট বসবে না।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পশুর হাট বসানো হবে। করোনা প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেলে পশুর হাট নিয়ে বিকল্প সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পশুর হাট শুরুর আগে স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য দিকগুলো নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করা হবে।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য অস্থায়ী হাটের যে শর্ত রয়েছে, স্থায়ী হাটের ক্ষেত্রেও একই শর্ত। এসব শর্ত মানার জন্য ইতিমধ্যে স্থায়ী হাটের ইজারাদারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২১
এমএম/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।