ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

স্বাস্থ্যবিধি মেনেও সরগরম ইফতার বাজার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২১
স্বাস্থ্যবিধি মেনেও সরগরম ইফতার বাজার চট্টগ্রামে ইফতার বাজারের প্রধান আকর্ষণ এখন মেজবানি মাংস। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিন স্বাস্থ্যবিধি মেনেও সরগরম ছিল ইফতার বাজার। সন্তানদের বায়না পূরণে অনেক বাবা-মা অভিজাত ক্লাব, রেস্টুরেন্ট, হোটেল থেকে পছন্দের ইফতার কিনে নিয়ে যান।

বিশেষ করে জিলাপি, হালিম, ফিরনি, মেজবানি মাংস, দই, দইবড়া, সিঙ্গাড়া, সমুচা, রোল ইত্যাদি পদ কিনতেই ঘরের বাইরে আসেন অনেকে।  

সরেজমিন দেখা গেছে, পহেলা বৈশাখের সরকারি ছুটি, করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে কঠোর লকডাউনের কারণে দিনভর নগরের সড়ক ফাঁকা থাকলেও ইফতারের বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে ব্যক্তিগত যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা বাড়তে থাকে।

বেশিরভাগ যানবাহনের গন্তব্য ছিল হোটেল-রেস্টুরেন্ট কিংবা স্বজনদের বাসা-বাড়ি।

ইফতার বিক্রি হয়েছে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ, চিটাগাং ক্লাব লিমিটেড, পেনিনসুলা, রোদেলা বিকেল, ফ্লেভারস, ড্রিপসসহ বিভিন্ন হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্টে।  

‘পিওর ফর শিওর’ স্লোগানে ভোজনরসিকদের কাছে জনপ্রিয়তা পাওয়া এমএ আজিজ স্টেডিয়াম মার্কেটের রোদেলা বিকেলে ইফতার বিকিকিনি শুরু হয় বেলা ২টায়। স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপদ দূরত্ব ও সরকারি প্রজ্ঞাপন মেনেই ট্রাডিশনাল ও সুস্বাদু ২০ পদের ইফতার বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি।  

এর মধ্যে প্রতিকেজি স্পেশাল মাটন হালিম ৭৫০ টাকা, দেশি চিকেন হালিম ৭৫০ টাকা, মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি প্লেট ৩০০ টাকা,  বিফ আকনি বিরিয়ানি প্লেজ ৩০০ টাকা, স্পেশাল ফিরনি ৫০০ টাকা কেজি, মেজবানি গরুর মাংস ১ হাজার টাকা কেজি, মিষ্টি দই ৪০০ টাকা কেজি, টক দই ৩৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।  

রোদেলা বিকেলের ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, করোনার কারণে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যত্নের সঙ্গে ইফতার তৈরি করছি আমরা। বেশিরভাগ ইফতারই আগের দিন ফোনে অর্ডার দেওয়া থাকে। এর বাইরে যা থাকে সব বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়।  

এখানে ছেলে মিহরানকে নিয়ে ইফতার কিনতে আসেন ডা. মিনহাজুর রহমান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চিটাগাং ক্লাবের ব্যাংকুইট হল থেকে হালিম ও ফিরনি নিয়েছি। রোদেলা বিকেল থেকে লাচ্ছা পরোটা, চিকেন টিক্কা, সিঙ্গাড়া, সমুচা কিনেছি।  

তিনি ইফতার বাজারে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।  

একই মার্কেটের সাকুরা কাবাবে প্রতিকেজি মাটন হালিম ৬০০ টাকা, চিকেন হালিম ৫০০ টাকা, মেজবানি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা।  

জিলাপি নিয়ে হইচই

কাজীর দেউড়ির এপোলো শপিং সেন্টারের বোম্বে রয়েল সুইটসে জিলাপি নিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হতে দেখা গেছে। ৩২০ টাকা কেজি দরে জিলাপি কেনার পর কার্টনসহ ওজন দেওয়ায় বেশ কয়েকজন গ্রাহক প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, সব মিষ্টির দোকানে কার্টনের ওজন বাদ দিয়ে খাদ্যপণ্য দেওয়া হলেও এখানে প্রতারণা করা হচ্ছে। কার্টনের কাগজের যে ওজন তা কিনতে হচ্ছে জিলাপির দামেই। পরে দোকানি ৩৪০ টাকা প্রতিকেজি জিলাপির দাম দাবি করেন।  

এখানে পাওয়া যাচ্ছে সমুচা, কাবাব (মিটবল), আলুর চপ, শামি কাবাব, চিকেন রোল, শর্মা, জালি কাবাব, শিক কাবাব, সাসলিক কাবাব, ফিরনি ইত্যাদি।  

হাত বাড়ালেই ইফতার

প্রতিবছরের মতো বড় পরিসরে না হলেও নগরজুড়ে বসেছে ইফতারের হাট। বেচাকেনাও জমে উঠেছে বেশ। বিশেষ করে দুই নম্বর গেট, জিইসি, বহদ্দারহাট, গরিবউল্লাহ শাহ মাজার, আগ্রাবাদ, বন্দরটিলা, নিউমার্কেট, শাহ আমানত সেতু এলাকাসহ প্রায় প্রতিটি ছোট-বড় হোটেল, রেস্টুরেন্টের সামনে ইফতারের পসরা দেখা গেছে।  

এ ছাড়া খেজুর, লেবু, তরমুজ, কলা, কাঁচা ও পাকা আম, ডাব, পুদিনা পাতা, মুড়ি, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা ইত্যাদিও বিক্রি হচ্ছে মোড়ে মোড়ে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২১
এআর/টিসি   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।